আজ খবর ডেস্ক:
ছিল ৯৬। হয়েছে ১২৩!
রয়াল বেঙ্গল রহস্য? হতে হতেও তা হল না! রহস্যের যবনিকা পতন হয় গেল।
গত কয়েক মাসে নাকি সুন্দরবনে বেড়েছে বাঘের (Royal Bengal Tiger) সংখ্যা।
বনকর্তারা (Forest Officer) প্রথমে বুঝতেই পারছিলেন না গোটা ভারতে যখন বাঘের সংখ্যা ক্রমশ কমছে, বাংলায় তা বাড়ছে কীভাবে?
সম্প্রতি এই রহস্যের সমাধান হয়েছে। জানা গিয়েছে, পদ্মাপার থেকে বাংলায় ঢুকছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।
বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে একঝাঁক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সুন্দরবনে চলে এসেছে।


সমীক্ষায় উঠে এসেছিল, ভারতে কমে এসেছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। সুন্দরবনে (Sundarban) বাঘ কমে যাচ্ছে এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই, সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সামগ্রিক চিত্র আচমকাই পাল্টা যায়। বাংলাদেশ থেকে একঝাঁক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সুন্দরবনে চলে এসেছে। বাঘের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় প্রকৃতিপ্রেমীদের মধ্যে খুশির হাওয়া।

এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Forest Minister of West Bengal Jyotipriya Mullick) বলেন, ‘”সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে এখন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা কমবেশি ১২৩টি। ২০২১ সালের বাঘ শুমারি (Tiger Census) অনুযায়ী, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৯৬টি। এই বছর বাঘের শুমারির তথ্য এবং ছবি হায়দরাবাদে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এখনও আসেনি। তবে সংখ্যা বাড়ার ইঙ্গিত মিলেছে। নতুন ২৭টি বাঘের সন্ধান মিলেছে। সুন্দরবন এলাকায় রামগঙ্গা–সহ অন্যান্য এলাকায় অন্তত পাঁচটি দ্বীপে বাঘের সন্ধান মিলেছে। এই দ্বীপগুলিতে টাইগার রিজার্ভ এরিয়ার (Tiger Reserve Area) অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এখানকার সংখ্যাটাও যোগ হবে। ভবিষ্যতে বাঘেরা বাচ্চার জন্ম দেবে। সংখ্যায় বাড়বে।”

কিন্তু, বাংলাদেশ থেকে পদ্মা পেরিয়ে এই রাজ্যে বাঘ ঢুকছে কেন?‌ বন দপ্তর সূত্রে খবর, সুন্দরবনের একটা বড় অংশ বাংলাদেশের মধ্যে পড়ে। সম্প্রতি বাংলাদেশের বাদাবনে বাঘের খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে।
সুন্দরবনের মোট আয়তন ১০ হাজার বর্গ কিমি। তার মধ্যে অধিকাংশটাই বাংলাদেশের অন্তর্গত, ৬০০০ কিমি। বাকি ৪০০০ কিমি ভারতে। আয়তনে বড় হলেও বাংলাদেশের বাদাবনে বাঘের খাবার নেই বললেই চলে। আর এরাজ্যের গ্রামে বাঘ ঢোকা রুখতে জঙ্গলে খাবারের জোগান অক্ষুণ্ণ রাখতে বেশ কিছু অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই টানেই সীমান্ত পেরিয়ে বাঘ ভারতের অন্তর্গত সুন্দরবন অংশে ঢুকছে।
তথ্য বলছে, ২০০৪ সালে বাংলাদেশে ৪০০-র কাছাকাছি বাঘ ছিল। ২০১৭-য় সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছিল ১৫০তে।

এই প্রসঙ্গে রাজ্যের বনমন্ত্রী বলছেন, ‘‘জঙ্গলে খাবারে টান ধরলেই বাঘ গ্রামে ঢুকে পড়ে। এভাবে প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সে কারণে বাঘ নিয়ে “মাস্টার প্ল্যান” বানানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বাদাবনে বাঘের খাদ্যের ভাঁড়ারে যাতে টান না ধরে, তা নিয়েও স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ মেনে নৌকায় চাপিয়ে হরিণ ও শূকর নিয়মিত ছেড়ে দিয়ে আসা হয় গভীর জঙ্গলে বাঘের এলাকায়। বাংলাদেশে ১২০টার মতো বাঘ আছে আপাতত। বাকিরা সবাই এপারে।”


তিনি আরও জানান, সুন্দরবনবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গ্রামগুলিকে বিশেষ ‘অ্যালুমিনিয়াম ফ্লেক্সিবল’ তারজাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *