আজ খবর ডেস্ক:
চলতি মাসের ১৩ তারিখ ছিল বিজেপির নবান্ন অভিযান (Nabanna Abhijan by BJP)। সেই কর্মসূচিতে দলের কর্মীদের উপর “অত্যাচারের” তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গড়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা (JP Nadda)। ঘটনাস্থলে গিয়ে, আহত কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে সেদিনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেবে কমিটি (Fact Finding Committee of BJP)।
পাঁচ সদস্যের এই কমিটিতে রয়েছেন প্রাক্তন পুলিশকর্তা তথা রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ ব্রিজলাল, লোকসভার বিজেপি সাংসদ কর্নেল রাজ্যবর্ধন সিং রাঠৌর, লোকসভার সাংসদ অপরাজিতা সারেঙ্গি, রাজ্যসভার সাংসদ সমীর ওরাও এবং পাঞ্জাবের বিজেপি নেতা সুনীল জাখর।

বিজেপি’র ওই কর্মসূচিতে গেরুয়া শিবিরের একাধিক কর্মী-সমর্থকের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠেছে । রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের (allegation of Bengal BJP) অভিযোগ, শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের TMC) নির্দেশেই তাঁদের নেতা-কর্মীরা পুলিশের জুলুমের শিকার হয়েছেন৷
হাওড়া (Howrah) ও কলকাতার (Kolkata) যে তিন জায়গা থেকে ওইদিন মিছিল শুরু হয়েছিল এবং মিছিল ঘিরে অশান্তি হয়েছিল, সেই সব জায়গা ঘুরে বিজেপি’র এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি ৷ দ্রুত তাদের রিপোর্ট জমা দেবে ৷
শুক্রবারই কলকাতায় পৌঁছয় বিজেপির এই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল।


কলকাতায় পা রেখেই পাঁচ সদস্যের দলের অন্যতম সদস্য ব্রিজলাল বলেছিলেন, ‘‘বাংলায় জঙ্গলরাজ চলছে। কাটমানি, তোলাবাজির রাজত্ব চলছে। কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি সামনে আসছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলের দুর্নীতি ফাঁস হয়েছে। বাংলার মানুষ সব দেখছে। এখানে গণতন্ত্র নেই, তামাশা চলছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে বাংলার মানুষ উচিত শিক্ষা দেবে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ নবান্ন অভিযানে অংশ নেননি, এমন বেশ কিছু বিজেপি কর্মীকেও আটক করেছে পুলিশ।

চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার রাজ্যে “দুর্নীতি”র প্রতিবাদে “নবান্ন অভিযান” কর্মসূচি নিয়েছিল রাজ্য বিজেপি। এসি পদমর্যাদার আধিকারিক-সহ একাধিক পুলিশকর্মী জখম হন। কলকাতায় পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে। একাধিক বিজেপি কর্মীও জখম হয়েছেন বলে দাবি। আহত হন কলকাতা পুরসভার ২২ ওয়ার্ডের কাউন্সিলার মীনাদেবী পুরোহিত।


শনিবার মীনাদেবীকে তাঁর বাড়িতে দেখতে যায় দিল্লি থেকে আসা টিম। ছিলেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পলও। সেই টিম কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেও যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।
বিজেপির প্রতিনিধিদলের বক্তব্য, শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপর পুলিশ নারকীয় আক্রমণ চালিয়েছে। সেইসঙ্গে তাঁদের আরও বক্তব্য, “ওই হামলার পরেও যে ভাবে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব (Abhishek Banerjee) গুলি চালানোর কথা বলেছেন তা ভয়াবহ। সারা দেশের জন্য তা বিপদ সঙ্কেত।” এই টিম ফিরে গিয়ে রিপোর্ট দেবে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডাকে।


প্রসঙ্গত, বিজেপির নবান্ন অভিযানে জখম হয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের আধিকারিক দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালে (SSKM Hospital) গিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই সংবাদ মাধ্যমকে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি ওই অফিসারকে বলেছি, আমি আপনাকে স্যালুট করি। আমার সামনে যদি কেউ পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিত, পুলিশকে মারত, আমি (নিজের কপালে আঙুল ঠেকিয়ে) তাদের মাথায় শ্যুট করতাম!’’ অভিষেকের এই মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতিতে।
এই প্রসঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য ব্রিজলাল বলেন, ‘‘এখানে এক নেতা রয়েছেন, যিনি মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো। তিনি দায়িত্বে থাকলে মাথায় গুলি মারতেন, এটা আমরা বুঝেছি।’’


যদিও পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, শুধু বিজেপি কর্মীদেরই কেন? আক্রান্ত পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে কেন কথা বলছে না বিজেপির এই প্রতিনিধি দল?

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *