আজ খবর ডেস্ক : পাঁচদিনের উত্তরবঙ্গ সফর শেষ করে এবার গোয়ায় পৌঁছলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্শিয়াং সার্কিট হাউস থেকে বাগডোগরা বিমান বন্দরের উদ্দেশ্য রওনা হওয়ার আগের মুহূর্তে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেছিলেন ‘গোয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছি। আজ সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ পৌঁছে যাব।’ কিন্তু সময়ের আগেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। সাথেই জানিয়েছিলেন, ‘আজ সকালে চা বাগানের মহিলা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। যতটা পেরেছি জনসংযোগ করেছি। সামনের মাসে আবার আসবো সবাই ভাল থাকবেন।’
রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় লাভের পর থেকেই জাতীয় রাজনীতির আঙিনায় পা রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম থেকেই আসন্ন ২০২২ এর লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্র ঠিক বিজেপিকে সরাতে সমস্ত অবিজেপি দলকে একজোট হওয়ার ডাক শোনা গিয়েছে তৃণমূল নেত্রীর গলায়। পাশাপাশি নিজের রাজ্যের নির্বাচনে জয়লাভ করার পর থেকেই দেশের অন্যান্য রাজ্যে তৃণমূলের শাখা বিস্তার করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি। সেক্ষেত্রে বিগত কিছুদিনে ত্রিপুরা ও অসমের নির্বাচনকে ঘিরে যেমন সেখানে সক্রিয় হতে দেখা গেছে তৃণমূল বাহিনীকে, তেমনি তাদের আরেকটি অন্যতম লক্ষ্য হল গোয়া। তাই এই মুহূর্তে গোয়ায় গিয়ে কী কর্মসূচি থাকছে মমতার সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
তবে যতদূর জানা যাচ্ছে, তিনদিনের এই সফরে জনসংযোগ বাড়াতে গোয়ার বহু এলাকা পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী। গোয়ার বহু রাজনৈতিক এবং সাংষ্কৃতিক ব্যাক্তিত্বের সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে তাঁর। শুধু তাই নয় জানা যাচ্ছে, গোয়ায় তৃণমূলের তরফ থেকে আগামীদিন একটি বিরাট মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে সেই মধ্যাহ্নভোজ থেকে শুরু করে চা চক্র পর্যন্ত দফায় দফায় বিভিন্ন শীর্ষ ব্যক্তিত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন তৃণমূল নেত্রী।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীন রাজনীতিবিদ লুইজিনহো ফালেইরো। তারপর তাঁকে ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সর্বভারতীয় সভাপতির পদে বসিয়েছেন। এছাড়া সদ্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন বাবুল সুপ্রিয়। এই মুহূর্তে গোয়ার গুরুদায়িত্ব রয়েছে বাবুলের উপর। তাই তিনিও ইতিমধ্যে সেখানে পৌঁছেছেন। সেই নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করে তার প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। বলেন , ‘গোয়া যেন টালিগঞ্জ না হয়ে যায়।’ বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও গোয়া সফরকে ঘিরে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে বলেন, ‘বিজেপি শাসিত রাজ্যে গিয়ে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা শিখে আসুন।’
ভোটে জয় লাভের পর থেকেই তৃণমূল যে হারে অন্য রাজ্যে নিজেদের ক্ষমতা বিস্তারে মরিয়া হয়ে উঠেছে, তাতে স্বাভাবিকভাবেই চাপ বাড়ছে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে। কিন্তু তৃণমূলের অন্যতম প্রধান বিরোধী দল বিজেপি কোনমতেই নিজেদের জায়গা ছাড়তে রাজি নয়। সুতরাং তৃণমূল নেত্রীর এই সফর শেষমেষ কতটা কার্যকরী হয় সেই উত্তর দেবে ভবিষ্যতই।