আজ খবর ডেস্ক:
পুজোর (Durga Puja 2022) বাদ্যি বেজে গেছে। তার মানে আগামী কয়েকদিন অনেকেরই রান্নাঘরের (Kitchen) দরজা বন্ধ। ভরসা, পুজো কমিটির ভোগ অথবা দোকান, রেস্তোরাঁ।
আর, বাইরের খাবার বললে সবার আগে যে বিষয়ে চিকিৎসকরা নজর দিতে বলেন, তা হল রান্নার তেল (Cooking Oil)।


আজকের দিনে প্রায় প্রত্যেকেই ডায়াবিটিস (Diabetes) সম্পর্কে সচেতন। দিন দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বিশেষত, ভারতের মত দেশে এই অসুখে আক্রান্তের সংখ্যা প্রচুর। দেখা গিয়েছে, এই অসুখে আক্রান্ত হলে শরীরের অন্যান্য অনেক সমস্যাই বাড়তে থাকে। ফ্যাটি লিভার, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা, কোলেস্টেরল। তাই ডায়াবিটিস রোগীকে তেল কম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

আবার এটাও মাথায় রাখতে হবে, কিছুটা তেল সুগার রোগীদেরও জরুরি (Essential oils for Diabetes)। তাই জানতে হবে কোন তেল খাবেন, কতটা খাবেন।
আমাদের শরীরে সুগারকে নিয়ন্ত্রণ করে ইনসুলিন হরমোন (Insulin Hormone)। এবার কোনও কারণে এই ইনসুলিন কম বের হলে বা কাজ না করতে পারলে অনেক ক্ষেত্রেই গুরুতর সমস্যা তৈরি হয়। তখন রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ে। সুগার বাড়লে বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হয়। এই কারণে ডায়াবিটিস রোগটির লক্ষণ জানা জরুরি।


এফডিএ’-র (FDA) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উৎসবের সময় মিষ্টি এবং অন্যান্য খাবার তৈরিতে নিম্নমানের তেল, মশলা, রং বেশি ব্যবহার করা হয়। কারণ, এই সময় খাবারের চাহিদাও অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি থাকে।
চলতি মাসের গোড়ার দিকে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ২.৫০ কুইন্ট্যাল ভেজাল খোয়া ক্ষীর উদ্ধার করেছে ‘এফডিএ’। মূলত দিওয়ালির (Diwali) আগে খাবারে ভেজালের উপস্থিতি এড়াতে দু’মাস আগে থেকেই বাড়তি নজরদারি শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে ‘এফডিএ’-এর কড়া নির্দেশ, লাইসেন্সহীন কোনও দোকান থেকে মিষ্টি কিংবা অন্য কোনও খাবার কেনা যাবে না।

ক্ষতিকারক স্টার্চ, ইউরিয়া মিশ্রিত দুধ, কস্টিক সোডা, কৃত্রিম রাসায়নিক মিষ্টি তৈরির উপকরণ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। খাবারের মাধ্যমে এইসব ক্ষতিকর জিনিস শরীরে প্রবেশ করে। যার ফলে আমাশা, ডায়রিয়া, কিডনির সংক্রমণ, লিভারের সমস্যার মত বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।
বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, খাবারে ব্যবহৃত তেলের ক্ষেত্রেও। চিকিৎসকদের মতে, তেল খেলে বাড়ে ওবেসিটি (Obesity)। আর ওজন বাড়লে শরীরে ঠিকমত কাজ করে না ইনসুলিন (Insulin Resistance)। এই কারণে সুগার বাড়ে। মাথায় রাখতে হবে যে সুগার হলে হার্টের রোগের আশঙ্কা থাকে। এই পরিস্থিতিতে নিয়মিত বেশি ভাজা বা তৈলাক্ত খাবার খেলে সমস্যা বাড়বে।
একদম কম পরিমাণ তেলে রান্না করা খাবার খেতে হবে। দিনে ৪ থেকে ৫ চা চামচ তেল খাওয়া যায়। এই হিসাবে প্রতিটি মানুষের জন্য হিসাব করে রান্না করতে হয়। তবেই আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন।

সবথেকে ভালো হয়ে অলিভ তেল (Olive Oil)। এই তেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া ক্যানোলা (Canola) খাওয়াও শরীরের জন্য মঙ্গল। তবে এই দুটি তেলের দাম বেশি। তাই খেতে পারেন সরষের তেল থেকে শুরু করে সানফ্লাওয়ার, রাইস ব্রান ইত্যাদি। কিন্তু যে কোনও দুই ধরনের তেল খেতে হবে। এক রকমের তেল খেলে সমস্যা বাড়বে। একটা রান্না সাদা তেলে হল তো একটা হোক সরষের তেলে।
ডায়াবিটিস রোগীদের এড়িয়ে যেতে হবে কিছু তেল। আরও নির্দিষ্ট করে বললে স্যাচুরেটেড ফ্যাট (Saturated Fat)। যেমন বনস্পতি, পাম তেল থেকে শুরু করে মাখন, ঘি, নারকেল তেল ইত্যাদি।


বাইরের দোকানে রান্না করার পর তেল রেখে দেওয়া হয়। তারপর সেই তেলেই ফের রান্না হয়। এটা খুবই খারাপ। তাই আপনাকে মাথায় রাখতে হবে যে একটি রান্না এক তেলেই হবে। বারবার ব্যবহার করলে, তেল খুব গরম হলে ক্ষতিকারক রাসায়নিক বের হয়ে আসে।
পুজোর চার দিন এইসব নিয়মে একটু ছাড় দিতেই পারেন। তবে মাথায় রাখবেন চার দিনের আনন্দ যেন বাকি জীবনের যন্ত্রণা না হয়ে দাঁড়ায়। তাই পূজোর আড্ডায় রোল, চপ, চাউমিন, পকোড়ায় একটু সতর্ক থাকুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *