আজ খবর ডেস্ক:
সে এক দিন ছিল! দশমীর পর পর খাম, পোস্টকার্ড, ইনল্যান্ড লেটারের ঢল নামত বাড়িতে। লেটারবক্স উপচে পড়ত আত্মীয় পরিজনের চিঠিতে। বিজয়ার প্রণাম, শুভেচ্ছা আর স্নেহাশীষ আসত অক্ষরের চেহারায়। দূর-দূরান্ত থেকে, খামবন্দী হয়ে।
সভ্যতা আধুনিক হয়েছে, প্রথার অবলুপ্তি এসেছে তার হাত ধরে। মোবাইল এসেছে, চিঠি লেখার চল এখন নেই বললেই চলে। এবছরের পুজোয় (Durga Puja 2022) সেই চিঠি চাপাটির রীতি ফিরিয়ে আনল বেহালার এক ক্লাব।
বেহালার শকুন্তলা পার্কের বালাজি মেরিগোল্ড আবাসনের প্রথম শারদোৎসবের শেষ বেলায় আবাসিক মহিলাদের মধ্যে দেখা গেল এক অন্য আবেগ ও উন্মাদনা। আজকের WhatsApp, sms-এর ভার্চুয়াল পৃথিবীতে প্রায় অবলুপ্ত বিজয়ার চিঠি লেখা। প্রণাম আটকে গেছে ইমোটিকনেই। আবেগ এখন যেন গ্রাফিকাল ইলাস্ট্রেশন।
এই কথাই ভাবায় স্থানীয় বাসিন্দা তাপস রায় ও নীলাভ রায়কে। আর এই ভাবনাকে সার্থক রূপ দিতে তাদের পরিচালনাতে বালাজি মেরিগোল্ডের মহিলারা দশমীর দেবীবরণের আগেই কাগজ-পেন নিয়ে বসে পড়লেন “বিজয়ার চিঠি” লিখতে।
“মাতৃ রূপেণ সংস্থিতা”।
মাতৃ রূপে পূজিত হন দুর্গা। সেই মায়ের পুজোর শেষ লগ্নে ওই আবাসনের মেয়েরা চিঠি লিখলেন নিজেদের মায়েদের উদ্দেশ্যে। বিবাহিত মেয়েদের চিঠি লেখার এই অভিনব প্রতিযোগিতায় বাঁধ ভাঙল আবেগের।
দৃষ্টি আই কেয়ার সেন্টার নিবেদিত এই প্রতিযোগিতার পুরস্কার হাতে পাওয়ার আনন্দ ছাপিয়ে জয় হল নস্টালজিয়ার। আবাসিক মহিলাদের চোখের জল বুঝিয়ে দিল, বিজয়ার চিঠি লেখাতেই বুঝি ফিরে ফিরে আসবে মা-মেয়ের আত্মিক যোগের আখ্যান।