আজ খবর ডেস্ক:
CV Ananda Bose রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) সহ গোটা বঙ্গ বিজেপি ক্রমশ অসন্তুষ্ট হয়ে পড়ছিলেন। গেরুয়া শিবিরে অভিযোগ উঠে, তাঁদের কথা শুনতে চাইছেন না সদ্য প্রাক্তন রাজ্যপাল এল এ গণেশন (LA Ganeshan)। এমনকী, কিঞ্চিৎ ঠাট্টার ছলেই অনেকে বলছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব নাকি “মিস” করছে জগদীপ ধনখড়কে (Jagdeep Dhankhar)।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা গড়াতেই এল বাংলায় রাজ্যপাল বদলের খবর। পশ্চিমবঙ্গের নতুন রাজ্যপাল হচ্ছেন সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ড. সিভি আনন্দ বোসকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী রাজ্যপাল হিসাবে নিয়োগ করা হল। তিনি যে দিন থেকে দায়িত্ব নেবেন সেদিন থেকেই এই নির্দেশ কার্যকর হবে।

বস্তুত, সোমবার বিজেপির প্রতিনিধিদল রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিল অখিল গিরি ইস্যুতে। কিন্তু জানা যায়, রাজ্যপাল তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে চাননি। রাজ্যপালের আত্ম সহায়ক এর কাছে অভিযোগ পত্র দিয়ে বিজেপির প্রতিনিধিদ দল বেরিয়ে এলেও রীতিমতো ক্ষুব্ধ ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গেরুয়া শিবিরে কান পাতলা শোনা যাচ্ছে, বিষয়টি যথেষ্ট “অপমানজনক” মনে করেছিলেন বিরোধী দলনেতা।


প্রকৃতপক্ষে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল, জগদীপ ধনখড়, ভারতের বর্তমান উপ-রাষ্ট্রপতি, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল থাকাকালীন বিজেপির যে কোনও ইস্যুতে সাড়া দিতেন। যা “পক্ষপাতদুষ্ট” আচরণ বলে হামেশাই অভিযোগ করত শাসক দল।


ধনখড় নিজেও প্রায়ই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সরকারের সঙ্গে নানান বিষয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়তেন এমন ঘটনাও বিরল ছিল না। শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকার বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে নিয়মিত বিজেপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করতেন। ফলে সোমবারের ঘটনায় যারপরনাই ক্ষুব্ধ ছিল গেরুয়া শিবির।

পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বুধবার দাবি করেছিলেন যে, রাজ্য শীঘ্রই একজন নতুন রাজ্যপাল পাবে যিনি প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন। আশ্চর্যজনক ভাবে ঠিক দুদিনের মাথায় সুকান্ত মজুমদারের সেই কথা যেন অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেল।
পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার পর অস্থায়ী রাজ্যপাল হিসাবে এ রাজ্যের দায়িত্ব নেন লা গণেশন। সম্প্রতি তাঁর পারিবারিক একটু অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দক্ষিণ ভারতে গিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শাসক দলের সঙ্গে গনেশনের সম্পর্ক মজবুত হওয়ায় ক্ষোভ আরও বেড়েছিল বিরোধী শিবিরে। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

আনন্দ বোস বর্তমানে মেঘালয় সরকারের উপদেষ্টা। অসামরিক কর্মচারী, গৃহায়ন বিশেষজ্ঞ (Housing Expert), লেখক এবং সুবক্তা। তিনি ভারত সরকারের সচিব পদে কাজ করেছেন। তিনি হ্যাবিট্যাট অ্যালায়েন্সের চেয়ারম্যান, জাতিসংঘের পরামর্শদাতা এবং জাতিসংঘের বাসস্থান পরিচালনা পরিষদের সদস্য ছিলেন।


জওহরলাল নেহেরু ফেলোশিপের প্রাপক, ডঃ সিভি আনন্দ বোস লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ন্যাশনাল একাডেমি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, মুসৌরিরও ফেলো।
তিনি জেলা কালেক্টর এবং শিক্ষা, বন ও পরিবেশ, শ্রম এবং সাধারণ প্রশাসনের মতো বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এবং অতিরিক্ত মুখ্য সচিব হিসেবে কাজ করেছেন।

তিনি ইউরোপিয়ান কাউন্সিল ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ (CERN), জেনেভা এবং আন্তর্জাতিক ফিউশন এনার্জি অর্গানাইজেশন, ITER, ফ্রান্সে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তিনি অ্যাটমিক এনার্জি এডুকেশন সোসাইটির চেয়ারম্যান ছিলেন।

বাংলার রাজনৈতিক মহলে এখন একটাই প্রশ্ন, নতুন স্থায়ী রাজ্যপাল কি পূর্বসূরী জগদীপ ধনখড়ের পথ অনুসরণ করবেন? নাকি স্বতন্ত্র ভাবে রাজ্যপাট চালাবেন কেরল জাত এই প্রাক্তন আইএএস?

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *