আজ খবর ডেস্ক- একদিকে যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে ব্যস্ত পরবর্তী নানা পরিকল্পনা নিয়ে, তখন চিন্তার কথা শোনাল ইউনাইটেড নেশনস। তাঁদের করা গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ৯ বছরের মধ্যে ভারতের বেশ কিছু শহর তলিয়ে যেতে পারে জলের তলায়।
অনবরত বেড়ে চলা পৃথিবীর তাপমাত্রা, দুই মেরুর হিমবাহ গলে যাওয়া কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পৃথিবীর মহাসাগরের জলস্তর বেড়ে ওঠার জন্যে। যার ভবিষ্যৎবাণী বলছে, এর ফল মারাত্মক। গবেষণায় উঠে এসেছে, এই মুহূর্তে যদি বিষাক্ত গ্রীন হাউজ গ্যাস উৎপাদন বন্ধ করা যেতে পারে তাহলে তা পৃথিবীর বুকে শূন্যের পর্যায়ে এসে পৌঁছবে ২০৫০ সালে। অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়েই চলেছে পৃথিবীর তাপমাত্রা।
শুধু তাপমাত্রাতেই শেষ নয়, অতিরিক্ত পরিমাণে তাপমাত্রা বাড়ার ফলে দেখা দিয়েছে প্রকৃতির খামখেয়ালীপনা। যেখানে বৃষ্টি হওয়ার কথা সামান্য সেখানে হয়তো নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েই চলেছে । আবার অন্যদিকে, যে এলাকায় বৃষ্টি দরকার, সেই এলাকা রয়ে গিয়েছে শুকনো। প্রকৃতির ভারসাম্য একেবারেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা।
পশ্চিমবঙ্গের উপকূল জুড়ে গত দু’বছর ধরে ঝড়-ঝাপটা লেগেই রয়েছে। কখনও আমফান, কখনও আবার যশ। একের পর এক ঝড় এবং অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়ে গিয়েছে বিস্তর। বিজ্ঞানীদের একাংশের চিন্তা, আর কিছু দশক পরে হয়তো মহারাষ্ট্র, গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরল রাজ্যের বেশকিছু শহর চলে যাবে জলের তলায়। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মৌসুনী এবং ঘোড়ামারা দ্বীপের একাংশ চলে গিয়েছে জলের তলায়। বলাবাহুল্য এই এলাকাগুলোয় চাষবাসের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে গিয়ে।
গবেষকরা বলছেন, ১৮৯১ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে ৪১ টি বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় এবং ২১ টি ছোট আকারের ঘূর্ণিঝড়ের ধাক্কা সামলেছে এই অঞ্চল। কোস্টাল রিস্ক স্ক্রীনিং টুল যন্ত্রের সাহায্যে দেখা গিয়েছে মহারাষ্ট্রের মুম্বাই এবং পশ্চিমবঙ্গের দীঘা, সুন্দরবন এবং ওড়িশার বিস্তীর্ণ অঞ্চল চলে যেতে পারে জলের তলায়। তার জন্যে অপেক্ষা বেশি দিনের নয়, বরং অদূরেই ২০৩০ সাল।
একদিকে গ্লাসগোতে সাড়ম্বরে চলছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন, অন্যদিকে ক্রমশ পৃথিবীর ভার বাড়ছে বিষাক্ত গ্যাসে। নিয়ম অনুযায়ী যতটুকু কার্বন বাতাসে ছড়াবে ঠিক ততটুকুই যদি বাতাস ফের শুষে নেয় তবেই শূন্যমাত্রায হিসেবে ধরে নেওয়া হবে প্রকৃতিতে কার্বনের অস্তিত্ব। এখন এই গবেষণার পর কতটা নড়ে চড়ে বসবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলি সেই দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ।