আজ খবর ডেস্ক : ইতিমধ্যেই আসন্ন পুরসভা ভোটে স্থানীয় স্তরে কোথায় জোট বা আসন সমঝোতা হবে, সে বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রাথমিক ভার জেলা নেতৃত্বের উপরেই ছেড়ে দিয়েছে সিপিএম ও কংগ্রেস। দু’পক্ষের মধ্যেও শেষ পর্যন্ত বোঝাপড়া হয়ে গিয়েছে। তবে পুরভোটের সেই সমঝোতায় আইএসএফ-কে নিতে যে দুই দলই বিশেষ আগ্রহী নয়, অন্তত বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য থেকে তার আঁচ স্পষ্ট।

সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে মঙ্গলবারই প্রশ্ন ওঠে, কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করে সাড়ে গত পাঁচ বছরে বামেদের কি বিশেষ কোন লাভ হয়েছে? এবার পুরভোটে কি বামফ্রন্ট নিজেদের শক্তিতেই স্বতন্ত্রভাবে লড়াই করে দেখাতে পারে না? তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে প্রাক্তন বিধায়ক ননী কর স্মারক বক্তৃতা দিতে গিয়ে বুধবার পুরভোট সংক্রান্ত প্রশ্নে বিমানবাবু বলেন, ‘‘পুরসভা ভোটে আমাদের সিদ্ধান্ত, আমরা মূলত বামফ্রন্টগত ভাবে লড়াই করব। তবে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে যাঁরা লড়াই করতে চান, তাঁদের সঙ্গে সমঝোতা হতে পারে।’’ পুরসভা ভোটে আইএসএফের সঙ্গে জোট নিয়ে প্রশ্ন করতেই মেজাজ হারিয়ে বিমানবাবু বলেন, ‘‘যাঁর যা মনোবাসনা আছে, আপনারা বলুন! আমি কিছু বলছি না!’’ এখনও পর্যন্ত শুধু কলকাতা ও হাওড়ার পুরভোটের দিনক্ষণই ঠিক করা হয়েছে। বিমানবাবুর মতে, সব পুরসভা কেন্দ্রেই ভোট হওয়া উচিত। তবে ২০১৮ সাল থেকে ১১৮ কেন্দ্রে পুরসভার নির্বাচন বকেয়া পড়ে আছে, সেগুলি যদি আগে হয়, সেক্ষেত্রে তাঁদের কোন আপত্তি নেই।

পুরভোটে জোটের ব্যাপারে তাঁরা যে জেলা নেতৃত্বের মতের উপরেই প্রথমে ভরসা করছেন, এদিন ফের সেকথাই স্পষ্ট করে দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবু। কিন্তু তাঁর বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনে তাঁরা আইএসএফের সঙ্গে জোট করেননি, তাই পুরভোটেও তা করার কোন প্রশ্নই ওঠে না। অধীরবাবু বলেন, ‘‘আমরা কখনওই বামেদের সঙ্গে জোটভঙ্গের কথা বলিনি। বামেরাই ২০১৬ সালের পরে কিছু দিন আলাদা আন্দোলনের কথা বলেছিল। আবার ২০২১ সালে তারা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে আগ্রহ দেখিয়েছিল। বামেদের দিক থেকে জোট নিয়ে কখনও সন্দিহান মনোভাব থাকলেও কংগ্রেসের মত এই ব্যাপারে সব সময়েই সুচিন্তিত।’’

সেই সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের দপ্তর বিধান ভবন থেকে কর্নাটকের এআইসিসি নেতা অজয় কুমার ব্যাখ্যা করেছেন, বাংলার বাইরে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মূল শক্তি হিসেবে রয়েছে কংগ্রেসই। বিভিন্ন রাজ্যে সাম্প্রতিক উপনির্বাচনের ফলেও বিষয়টি প্রমাণিত। তবে লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে সর্বভারতীয় স্তরে কংগ্রেস তৃণমূলের সঙ্গে আগামীদিনে সমঝোতা করবে কি না, তা নিয়ে কোনরকম মন্তব্য করতে চাননি অজয়। তিনি শুধু বলেছেন, এই বিষয়ে রাহুল গান্ধীই সঠিক সময় সিদ্ধান্ত নেবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *