আজ খবর ডেস্ক : আগামী ১৬ ই নভেম্বর থেকে রাজ্যেজুড়ে কমতে চলেছে বিলিতি মদের দাম। বর্তমানে যে দাম রয়েছে তার তুলনায় বেশ কিছুটা সস্তায় মিলবে বিয়ারও। রাজ্য সরকার আবগারি শুল্ক কমানোর জন্যই কমতে চলেছে এই দাম। ফলে বাজারে বিলিতি মদ ও বিয়ার বিক্রির পরিমাণও উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলত রাজ্যের সার্বিক আবগারি রাজস্ব আদায়ও বাড়তে পারে বলে মনে করছে প্রশাসন।রাজ্য অর্থ দফতরের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি (নম্বর ১৩২৮, তারিখ নভেম্বর ৩, ২০২১) অনুযায়ী, সরকার আবগারি শুল্কের হার সংশোধন করেছে, তার ফলে ভারতে উৎপাদিত সমস্ত বিলিতি মদ ও বিয়ারের দাম কমবে রাজ্যে।বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বিলিতি মদের দাম এখনকার তুলনায় প্রায় প্রায় ২৫ শতাংশ কমতে পারে। বোতলের (৭৫০ মিলিলিটার) সর্বোচ্চ ২,০০০ টাকা এমআরপি পর্যন্ত দামে ১০০ থেকে ৪৫০ টাকা মতো কমবে। আর ২,২০০-২,৩০০ টাকা এমআরপি-র ক্ষেত্রে দাম কমতে পারে ৫০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত।

উদাহরণস্বরূপ, বর্তমানে রয়্যাল স্ট্যাগ বোতলের দাম ৯৮০ টাকা, যা কমে ৭১০ টাকা মতো হতে পারে। ব্লেন্ডার্স প্রাইডের দাম প্রায় ৪৩০ টাকা কমে ৯২০ টাকা হতে পারে। অন্য দিকে, রয়্যাল চ্যালেঞ্জ ও ম্যাকডয়েল রামের বোতলের দাম যথাক্রমে ২৭০ টাকা ও ১০০ টাকা কমতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহল মহল। তবে পুরনো স্টক শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন দামের স্টক তুলতে পারবে না দোকানগুলি।কিন্তু, মদের দাম কমলে তো সরকারের মোট আবগারি রাজস্ব আদায়ও কমে যেতে পারে? সে ক্ষেত্রে কী ভাবে দৈনন্দিন খরচ ও মূলধনী ব্যয়ের জন্য রাজ্য সরকার এই আর্থিক ঘাটতি পূরণ করবে? এক প্রশাসনিক কর্তার জবাব, ‘মোটেও রাজস্ব আদায় কমবে না। বরং, দাম কমলে বিক্রি বাড়বে এবং আমাদের হিসাবে তাতে আবগারি রাজস্ব সংগ্রহও এখনকার তুলনায় অবশ্যই বৃদ্ধি পাবে।’করোনা-লকডাউনের জন্য গত বছর মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে প্রায় সমস্ত খাতে রাজ্যের আদায়কৃত রাজস্ব সংগ্রহ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বাধ্য হয়ে, সরকার মদের উপর প্রথমে ৩০ শতাংশ বিক্রয় কর বসিয়েছিল, যা পরে অতিরিক্ত আবগারি শুল্কে পরিবর্তিত করা হয়েছিল।ফলে বিলিতি মদের দাম বেশ খানিকটা বেড়ে যায়। যে কারণে লিটার হিসাবে মদের বিক্রির পরিমাণও বেশ খানিকটা কমে যায়। যার প্রতিফলন পড়তে দেখা গিয়েছিল ২০২০-২১ সালের সরকারের মোট আবগারি রাজস্ব সংগ্রহে।

সংশোধিত হিসাবে, ২০২০-২১ সালে রাজ্যে মোট আবগারি রাজস্ব আদায় হয়েছে ১১,৪৫৮.৪০ কোটি টাকা, যেখানে বাজেট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২,৭৩১.৫৬ কোটি টাকা।ওই সরকারি কর্তা আরও জানান, ‘চলতি অর্থ বছরের বাজেটে আবগারি রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ১৬,১০০ কোটি টাকা। এখনও পর্যন্ত সাত মাসে যে রাজস্ব আদায় হয়েছে, তাতে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী। এখন ২০১৯-২০ সালের তুলনায় বিলিতি মদের বিক্রি কম। দাম কমলে বিক্রি অবশ্যই বাড়বে।’সরকারি সূত্রে খবর, ধীরে ধীরে রাজ্যে দেশি মদের পরিবর্তে সম্পূর্ণ বিলিতি মদ বিক্রির পরিকল্পনার দিকে এগোচ্ছে রাজ্য সরকার। কারণ, বিলিতি মদের গুণমানও ভালো এবং তার থেকে শুল্কের হারও বেশি পাওয়া যায়। তাতে কোষাগারে বাড়তি অর্থ আসার সম্ভাবনা তৈরি হবে।

রাজ্য প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘চলতি অর্থ বছরের মধ্যেই কম স্ট্রেংথের (৫০ ডিগ্রি আন্ডার প্রুফ) বিলিতি মদ বাজারে আসতে পারে। বোতলের দাম পড়বে ২০০-২৫০ টাকা।’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বেআইনি চোলাই মদের বিক্রি সম্পূর্ণ বন্ধ করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই অপেক্ষাকৃত কম দামি ৭০ ডিগ্রি আন্ডার প্রুফের দেশি মদ বাজারে বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের নতুন পদক্ষেপে কতটা কমতে পারে মদের দাম তার একটি সম্ভাব্য তালিকা নীচে দেওয়া হল।রয়্যাল স্ট্যাগ ৯৮০ টাকা থেকে কমে হতে পারে ৭১০ টাকারয়্যাল চ্যালেঞ্জ ১০০০ টাকা থেকে কমে হতে পারে ৭৩০ টাকাব্লেন্ডার্স প্রাইড ১৩৫০ টাকা দাম কমে ৯২০ টাকা হতে পারেম্যাকডয়েল সেলিব্রেশন রাম ৬৪০ টাকা থেকে কমে ৫৪০ টাকা হতে পারেঅ্যান্টিকুইটি ব্লু দাম কমে ১৬১০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা হতে পারে (উপরিউক্ত প্রতিটিই ৭৫০ মিলিলিটার বোতলের দাম)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *