আজ খবর ডেস্ক : ওয়ানডে বিশ্বকাপে অপ্রতিরোধ্য পারফরমেন্সে পাঁচবার সেরার খেতাব জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু টি-২০ বিশ্বকাপ এতদিন যাবৎ অধরাই ছিল অজিদের। রবিবার সেই ‘অধরা’ খেতাব জিতে নিলেন অ্যারন ফিঞ্চ-ডেভিড ওয়ার্নাররা। নিউজিল্যান্ডের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে বিশ্ব সেরার খেতাব ছিনিয়ে নিল অস্ট্রেলিয়া। এর আগে ২০১০ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে ফাইনালেই দৌড় শেষ হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার। সেবার কিছু ভুল ত্রুটির কারণে ইংল্যান্ডের কাছে হার মানতে হয়েছিল। কিন্তু সেই ভুলের আর পুনরাবৃত্তি হয়নি।বিশ্বকাপে শুরুর দিকে অনেকেই অস্ট্রেলিয়াকে প্রিয় দলের তালিকায় ধরেননি। কিন্তু মাঠে নামতেই পরাক্রমশালী অবতারে ধরা দেন ‘ব্যাগি গ্রিন’রা। ধীরে ধীরে টুর্নামেন্ট যত এগোতে থাকে, ততই যেন ছন্দ বদলাতে থাকে অস্ট্রেলিয়া।
ম্যাচের শুরু থেকেই পাকিস্তানের মতো অপরাজেয় দলকে, রীতিমত ধুলো চাটিয়ে ফাইনালে ওঠে অস্ট্রেলিয়া। আর ফাইনালে প্রতিবেশী দেশ নিউজিল্যান্ডকেও একই ভাবে ধরাশায়ী করলো তাঁরা। ৮ উইকেটে জিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হল অস্ট্রেলিয়া। এর আগে ২০১৫-র ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালে কিউয়িদের বিরুদ্ধে কাপ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। রবিবার টস জিতে প্রথম বোলিং এর সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে ড্যারিল মিচেল শেষপর্যন্ত নিউজিল্যান্ডকে পৌঁছে দিয়েছিলেন ফাইনালে। যদিও রবিবারের খেলায় বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকে থাকতে পারেননি তিনি। ১১ রান করেই তাঁকে ফিরতে হয় ড্রেসিং রুমে। নিউজিল্যান্ডের তখন এক উইকেটে ২৮ রান। তাতেই উইলিয়ামসন ও মার্টিন গাপ্তিল ইনিংস গোছানোর চেষ্টা করেন। তবে গাপ্তিল ও উইলিয়ামসন যখন ব্যাট করছিলেন, তখন গাপ্তিলকেই কিছুটা নিষ্প্রভ দেখাচ্ছিল। তবে ইনিংসের গতি ধরে রেখেছিল কিউয়ি অধিনায়কই। গাপ্তিল ও উইলিয়ামসন জুটি তৃতীয় উইকেট পর্যন্ত স্কোর বোর্ডে ৪৮ রান জোড়েন। গাপ্তিল আউট হওয়ার পরে উইলিয়ামসন আরও নির্দয় হয়ে যান। ২০ ওভারের শেষে নিউজিল্যান্ড যে ১৭২ রান করে, বলা ভাল তার সিংহভাগ কৃতিত্বই নিউজিল্যান্ড অধিনায়কের। অজি বোলারদের আক্রমণ করা থেকে শুরু করে, ইনিংসে মোমেন্টাম আনা সবই সামলেছেন একার হাতে।
কিন্তু তারপর একেবারে সেঞ্চুরীর দোরগোড়ায় এসে স্মিথের হাতে ধরা পড়লেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক। যদিও এর আগে ২১ রানে হ্যাজলউড এর হাতে ক্যাচ মিস হওয়ায় জীবন ফিরে পেয়ে উইলিয়ামসন। তারপর ৮৫ রানে থেমে যায় তাঁর দৌড় । তিনি ও ফিলিপস ৬৮ রান করেন । শেষের দিকে জিমি নিশাম ১৩ রান ও সেইফার্ট ৮ করে নিউজিল্যান্ডকে পৌঁছে দেন ১৭২ রানে।ফাইনালে ১৭২ রান করতে নেমেই অ্যারন ফিঞ্চ ৫ রানে আউট হয়ে যান। এবারের মতো টুর্নামেন্ট একেবারেই ভাল গেল না তাঁর। কিন্তু শুরুতে উইকেট হারালেও দমিয়ে রাখা যায়নি অস্ট্রেলিয়াকে। এরপর ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ আক্রমণের পথ বেছে নেন। ওয়ার্নার ও মার্শ এর পার্টনারশিপ ৯২ রান গড়েন। যেভাবে দুই অজি ব্যাটসম্যান খেলা ধরে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তাতে তখন থেকেই জয়ের আঁচ পেতে শুরু করে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
ম্যাচে ফিরতে হলে ওই মুহূর্তে উইকেট তুলতে হত কিউয়িদের। এরপর ট্রেন্ট বোল্ট এর বোলিং বিপজ্জনক ওয়ার্নারকে ৫৩ রানে থামিয়ে দেয়। তার পরেও অবশ্য অজিদের থামানো সম্ভব হয়নি। কারণ ক্রিজে তখন ছিলেন জমে যাওয়া মার্শ (৭৭*) ও ম্যাক্সওয়েল (২৮*)। তাঁরাই বাকি কাজ শেষ করেন।