আজ খবর ডেস্ক : করোনার তৃতীয় ঢেউ কবে থেকে আসবে ভারতে সেই নিয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। তবে কিছুদিন আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে জানান হয়েছিল, শিশুদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় তাদের তৃতীয় ঢেউয়ে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। সুতরাং শিশুদের মধ্যে যদি সংক্রমণ বেশি মাত্রায় ছড়াতে থাকে সে ক্ষেত্রে কি ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে? সেই নিয়েই নতুন গাইডলাইন প্রকাশ করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সেন্টার ফর এমার্জেন্সি এন্ড ট্রমা কেয়ার।

তৃতীয় ঢেউ আসার আগে ভারতীয় হাসপাতালগুলিতে ঠিক কী কী ধরনের ব্যবস্থাপনা নেওয়া যেতে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে এই গাইডলাইনে।গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ভারতবর্ষে সংক্রমণের হার যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছিল। তখন প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ২৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পায়। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ভারতে তৃতীয় ঢেউ এলে ৫ কোটির বেশি শিশু ও কম বয়সীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যে পরিকাঠামো এদেশে প্রয়োজন তার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এমনকি ততজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও মেডিকেল স্টাফও এই মুহূর্তে ভারতে নেই। তাই তৃতীয় ঢেউ আসার আগে ভবিষ্যতের জন্য আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে ভারতকে।

তৃতীয় ঢেউ ঠিক কতটা আশঙ্কার কারণ হয়ে উঠতে পারে?

১) বিশেষজ্ঞদের মতে করুণার তৃতীয় ঢেউ এলে ১৮ বছরের নিচে ৪১ শতাংশ হাই রিস্ক গ্রুপে থাকবে।

২) ভারতের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ সংক্রমিত হতে পারে। তাতে হিসেব করলে দেখা গেছে পাঁচ কোটির বেশি বাচ্চা এবং কম বয়সীদের মধ্যে সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে প্রবল।

৩) আক্রান্তদের ১০ শতাংশকে হাস্পাতালে ভর্তি করতে হতে পারে তার মধ্যে ৫ শতাংশকে ভর্তি করতে হতে পারে আইসিইউতে।

গাইডলাইনে কি বলা হয়েছে ?

স্ক্রীনিং এর জন্য আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে : টেস্ট ও ও স্ক্রিনিংয়ের জন্য আলাদা জায়গা তৈরি করতে হবে। জায়গাটি অবশ্যই বড় এবং খোলামেলা হতে হবে। বাচ্চাদের সঙ্গে অভিভাবকদেরও পরীক্ষা এবং স্ক্রীনিং করতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়লে যেন তাদের ভর্তি করা যায় সেই ব্যবস্থাও রাখতে হবে।

এইচডি ইউনিট : করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে শ্বাস কষ্টের সমস্যা দেখা গিয়েছিল রোগীদের মধ্যে। তাই তৃতীয় ভিউ আসার আগেই হাসপাতালগুলিতে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট তৈরি করতে হবে। যেখানে অক্সিজেন সাপোর্ট, সিপ্যাপ , বাইপ্যাপ সাপোর্ট থাকবে। মেডিকেল ভেন্টিলেটরের পাশাপাশি লিকুইড অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

পিডিয়াট্রিক আইসিইউ : হাসপাতালগুলিতে পিডিয়াট্রিক আইসিইউ এর সংখ্যা বাড়াতে হবে। সংকটাপন্ন শিশুদের থেরাপির জন্য বিশেষ মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশনের সাপোর্ট রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে আইসিইউ এর প্রবেশ এবং বাহির পথ যেন আলাদা হয়। শিশুদের সঙ্গে একজন করে অভিভাবক থাকতে পারবেন সব সময়। তবে তাদের n95 মাস্ক পড়ে থাকতে হবে।

সাইকলজিক্যাল কাউন্সেলিং : করোনার কারণে শিশুদের শরীর ও মন দুইই বিপর্যস্ত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আতঙ্ক, অবসাদের শিকার হতে পারে শিশুরা। তাই রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি তাদের ভালো মানসিক স্বাস্থ্য সুনিশ্চিত করতে কাউন্সেলিং এর ব্যবস্থা করতে হবে। ৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে এই ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। তাই তাদের আচরণবিধি ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *