আজ খবর ডেস্ক- তিনি ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল। বিজেপির জন্য সক্রিয় কর্মী হয়ে ওঠার চেষ্টা চালিয়েছেন বলে বারবার দাবি করেছেন তিনি। সাংগঠনিক ভুল সংশোধনের জন্য বারবার চিঠি দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে। কিন্ত তা গুরুত্ব পায়নি। অভিযোগ, তথাগত রায়ের ঘনিষ্ঠ মহলে। বেশ কিছুদিন ধরেই জল্পনা ছিল। এবার বঙ্গ বিজেপিকে “বিদায়” জানালেন তথাগত নিজেই।

বঙ্গ বিজেপি ছাড়ার কথা নিজেই টুইট করে জানালেন তথাগত। তবে তিনি লিখেছেন “আপাতত বিদায়, বঙ্গ বিজেপি”। টুইটারে এই ধরনের মন্তব্য ফের একবার জল্পনা উস্কে দিয়েছে বিজেপির অন্দরে। আগেও তথাগত রায়কে সমাজ মাধ্যমে নির্বাচনের আগে প্রার্থী বাছাই নিয়ে বিভিন্ন কটাক্ষ করতে দেখা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্তরের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে বেহালা পশ্চিম কেন্দ্র থেকে টিকিট দেওয়ার পরে ‘নগরের নটি” বলে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন তথাগত রায়। এদিন ফের একবার তাঁর টুইটে সাড়া পড়ে গেল রাজনৈতিক মহলে।

বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বর তরফে একাধিকবার শোনা গিয়েছে তথাগত রায়কে আর সেই ভাবে জায়গা দেওয়া হবে না। তিনি দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে উদ্যত হয়ে উঠেছেন। কিছু বলার আগে দু’বার ভাবনা-চিন্তা করে বলেন না। অন্যদিকে বিজিপি প্রসঙ্গে যথেষ্ট ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তথাগত রায়। জাতীয় কমিটিতে একাধিক বার থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করার পরেও কোনও রকম জায়গা দেওয়া হয়নি দলের তরফে তাঁকে। এ প্রসঙ্গে তথাগত ঘনিষ্ঠ বৃত্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “তৃণমূল নেতা রাজীব ব্যানার্জিকে সরাসরি কেন্দ্রীয় কমিটিতে নিয়ে নেওয়া হল। অথচ আমাকে নেওয়া হল না”।

রাজনৈতিক মহলে চর্চা, “আপাতত বিজেপি বিদায়” বলতে তথাগত রায় ঠিক কী বলতে চেয়েছেন? এই আপাতত বিদায়টি পাকাপাকিভাবে বিদায়ে পরিণত হবে পরে? তিনি কি অন্য দলের বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করছেন? রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, এই প্রশ্নগুলির উত্তর এখনই সম্পূর্ণভাবে উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তথাগত রায়ের টুইট মন্তব্য প্রসঙ্গে এতটুকু পরিষ্কার, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে তিনি তাঁর যোগ্য মর্যাদা পাননি।

যদিও এই প্রশ্নে তথাগত রায় জানান, তিনি কখনও কোনও ক্ষমতা চাননি বা নির্বাচনে লড়ার টিকিটের জন্য আশা করেননি। কেন্দ্রীয় কমিটিতে থেকে বাংলার জন্য সংগঠন তৈরি করার জন্য সচেষ্ট হয়েছিলেন । পাশাপাশি তিনি বলেন, দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে চলার অঙ্গীকার পর্যন্ত করেছিলেন তিনি। তা সত্ত্বেও সেই ভাবে গুরুত্ব বা পদমর্যাদা দেওয়া হয়নি তথাগত রায়কে। বঙ্গ রাজনীতিতে এরপরই বড়োসড়ো বাঁক আসে পদ্ম শিবিরে। তথাগত রায় বলেন, যাবতীয় নিয়মের কথা ফাঁস করে দেবেন তিনি। দলের ভেতর যে নিয়মিত দুর্নীতি চলছে সেই দুর্নীতির কথা প্রকাশ্যে নিয়ে আসবেন তথাগত। এও বলেন দলের ভেতরে যে দুর্নীতি চলছে তা প্রকাশ্যে এসে পড়বে বলেই তথাগত রায়কে জায়গা দেয়নি শীর্ষ নেতৃত্ব।

তথাগত অভিযোগ করেন, গোটা বিষয়টি বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাকে জানিয়েছেন তিনি। এই বিষয়ে দশ পাতার চিঠি দিয়েও কোনও লাভ হয়নি। দিলীপ ঘোষ তথাগত রায় এর টুইট প্রসঙ্গে বলেন, “উনি থাকতে দলের কোন উপকার হয়েছে তাঁর অন্তত জানা নেই। তিনি দলে থাকার কারণে দলের হয়ে কতটা কাজ তিনি করেছেন?” পাশাপাশি দিলীপ ঘোষ বলেন, তিনি তাঁর নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত, দল নিয়ে ব্যস্ত। তথাগত কি বললেন তাতে কিছু যায় আসে না। রাজনৈতিক মহলে অবশ্য অনেকে মনে করছেন তথাগত রায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন তাই বঙ্গ বিজেপি নির্বাচনের পর এতটা কোণঠাসা হওয়ার জন্য এক প্রকার রাজ্য নেতাদের উপর দায় ঠেলে দিয়েছেন তিনি।

একপ্রকার হতাশা থেকেই তিনি সাময়িক বিদায় নিচ্ছেন? নাকি তৃণমূলে যোগ দিয়ে ত্রিপুরায় মাঠে নামবেন? আপাতত সেই আলোচনায় মশগুল বঙ্গ রাজনীতি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *