আজ খবর ডেস্ক : তিনদিনের দিল্লি সফরে গিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সফরের মাঝেই গতকাল অর্থাৎ বুধবার বিকেলে রাজধানীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন প্রবীণ বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। এরপরই শুরু হয় জল্পনা। তবে কি তিনি যোগ দেবেন তৃণমূলে ? এরপর এই বিষয় সুব্রহ্মণ্যম তাঁর প্রতিক্রিয়া জানান। বলেন, ‘আমি মমতার পাশেই আছি। আলাদা করে দলবদল করার কোনও প্রয়োজন নেই।’ তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ সারার কয়েক ঘণ্টা পরই প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সরকারের ব্যর্থতার রিপোর্ট কার্ড তুলে ধরে মোদি বিরোধী তোপ দাগলেন স্বামী।
টুইটারে মোদী সরকারের সমালোচনায় মুখর হন বিজেপির এই প্রবীণ নেতা। কোন কোন ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি সরকার, সেই নমুনাও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন তিনি। তাঁর আক্রমণের মূল কেন্দ্রে ছিল মোদী সরকারের অর্থনীতি, বিদেশনীতি, সীমান্ত নিরাপত্তা, জাতীয় নিরাপত্তা-সহ একাধিক বিষয়।স্বামীর মতে, বর্তমান সময়ে দাড়িয়ে কেন্দ্র দেশের অর্থনীতি সামলাতে ব্যর্থ হয়েছে। শুধু তাই নয়, আফগানিস্তান নিয়ে ভারত সরকারের ভূমিকার বিরুদ্ধেও প্রশ্ন তোলেন স্বামী। আফগানিস্তান সঙ্কট নিয়ে সরকারি বিদেশনীতি যে ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে, সেই প্রসঙ্গও উঠে এসেছে প্রবীণ বিজেপি নেতার টুইটে। সীমান্ত নিরাপত্তার সুনিশ্চিত করতেও ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্র সরকার, বলেই মত তাঁর।এছাড়া তাঁর সমালোচনার নিশানায় ছিল দেশের অভ্যন্তরীণ এবং জাতীয় নিরাপত্তা। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা প্রসঙ্গে কাশ্মীরের পরিস্থিতির কথাও উল্লেখ করেন স্বামী।
কিছুদিন আগেই পেগাসাস স্পাইওয়্যার নিয়ে তোলপাড় হয়েছে গোটা দেশীয় রাজনীতি। সেই পেগাসাস কাণ্ডের কথা তুলে এনেই সরকারকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, এই সরকারের আমলে জাতীয় নিরাপত্তাও সুরক্ষিত নয়।কেন্দ্র বিরোধী টুইটে স্বামী লেখেন, ‘মোদী সরকারের রিপোর্ট কার্ড—অর্থনীতি— ব্যর্থ।সীমান্ত নিরাপত্তা— ব্যর্থ।বিদেশিনীতি— আফগানিস্তান সঙ্কটজাতীয় নিরাপত্তা— পেগাসাস এনএসওঅভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা— কাশ্মীর পরিস্থিতি।এই সব কিছুর জন্য দায়ী কে?’
বিগত কিছু সময়ে দল বিরোধী মন্তব্যের জেরে একাধিকবার গেরুয়া শিবিরকে অস্বস্তিতে ফেলেছে স্বামী। ফলত বিজেপি-র সঙ্গে স্বামীর সম্পর্ক এই সময় কার্যত তলানিতে ঠেকেছে। গত মাসেই বিজেপি-র সর্বভারতীয় কর্মসমিতির সদস্য পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় রাজ্যসভার প্রবীণ সাংসদকে। তাছাড়া এটাই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার প্রকাশ্যে মমতার প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। অক্টোবরে মমতার রোম-সফরে সম্মতি না দেওয়া নিয়েও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেখা গিয়েছিল স্বামীকে।
শুধু তাই নয়, সীমান্তে ভারত – চিন সম্পর্ক নিয়েও সম্প্রতি টুইট করে মোদী সরকারকে কটাক্ষ করেন তিনি। স্বামী বলেন, ‘চিন যদি আমাদের পরমাণু অস্ত্র নিয়ে ভয় না পায়, তা হলে আমরা পাচ্ছি কেন?’ এমনকি এক টুইটার ব্যবহারকারীর ‘মোদীনমিকস’ শব্দের উত্তরে পাল্টা টুইটও করেন স্বামী। বলেন, ‘অর্থনীতির কিছুই জানেন না মোদী।’