আজ খবর ডেস্ক- শীতকালে গুড়ের জুড়ি মেলা ভার। আখি গুড়-পাটালি সঙ্গে রয়েছে ভেলি গুড়। পায়েস থেকে শুরু করে রুটির সঙ্গে গুড় থাকলে বাঙালির যেন আর কিছুই চাই না। তবে সেই গুড় উপকারী হতে পারে শরীরের জন্য নানাভাবে, এমনই তথ্য দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
চিকিৎসকদের মতে নিয়মিত খাবারের পাতে গুড় থাকলে সাতটি রোগ দূরে থাকবে শরীর থেকে। রস থেকে তৈরি করা প্রাকৃতিক গুড়ে থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। খেজুরের গুড়ে এমন অনেক ওষুধি গুণাগুণ থাকে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। প্রাকৃতিক উষ্ণতা এবং খনিজ উপাদান পাওয়ার জন্য বহুকাল ধরেই এই গুড়ের প্রচলন হয়ে আসছে খাবারের পাতে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, খেজুর গুড়ে থাকে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম ও ফসফরাসের মত উপাদান। এখানেই শেষ নয়, জিঙ্ক, তামা, থায়ামিন, রাইবোফ্লাভিন ও নিয়াসিনও আছে এই খেঁজুরের গুড়ে। গবেষকরা বলছেন, গুড়ে ভিটামিন বি, উদ্ভিদ প্রোটিন, ফাইটোকেমিক্যালস ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে ভরপুর মাত্রায়। যেহেতু শীতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা হলেও কমে যায়, তাই এই সময় খাদ্যতালিকায় নিয়মিত গুড় রাখলে তা খুবই উপকারী।
খেজুরের গুড়ে থাকা ওষুধি উপাদান মাইগ্রেনের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। যারা মাইগ্রেনের সমস্যায় কষ্ট পান, তারা নিয়মিত অল্প করে গুড় খেতে পারেন অনায়াসেই।
শীতে কমবেশি সবাই শুকনো কাশি, ঠান্ডা লাগার মত সমস্যায় ভোগেন। এই ক্ষেত্রে খেজুরের গুড় খুবই ভাল। এ ছাড়াও কফ দূর করতে সাহায্য করে।
খেজুরের গুড়ে থাকা পর্যাপ্ত পটাশিয়াম শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখে। অল্প পরিমাণে গুড় খেলে ধীরে ধীরে অতিরিক্ত ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
নারীদের ঋতু চক্র চলাকালীন পেট ব্যথা দূর করতে খেজুরের গুড় দুর্দান্ত কাজ করে। পাশাপাশি, শরীর থেকে টক্সিক ভাব দূর করতেও সাহায্য করে নলেন গুড়।
শীতে শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করে খেজুরের গুড়। এতে থাকা কার্বোহাইড্রেট রক্তের সঙ্গে দ্রুত মিশে যায় ও দীর্ঘক্ষণ বজায় থাকে। ফলে হঠাৎ শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার ভয় নেই এই ধরনের রোগীদের।
গুড়ে থাকে পর্যাপ্ত আয়রন, যা শরীরের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রেখে রক্তের কম হওয়ার সমস্যা দূর করে। এ ছাড়াও এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম স্নায়ুর কাজকর্ম ঠিক রাখে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, নিয়মিত অল্প করে গুড় খেলে শরীরে দীর্ঘক্ষণ এনার্জি পাওয়া যায়। এ ছাড়াও খাবার দ্রুত হজম হয় ও বদহজমজনিত সমস্যাও দূর করে। গুড়ে মজুত ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর করতে সাহায্য করে।
বেশি পরিমাণে না হলেও অল্প করে গুড় খাওয়া নানা ভাবে সাহায্য করবে শরীরের বেশ কিছু রোগকে দূরে রাখতে। তাই চিকিৎসকেরাও নিয়মিত অল্প করে গুড় খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।