আজ খবর ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট বি.১.১.৫২৯। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের নাম দেওয়া হয়েছে ওমিক্রন । এই ভ্যারিয়েন্টকে কোভিডের অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমক বলে মনে করা হচ্ছে। দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতার কারণেই বি.১.১.৫২৯ ভ্যারিয়েন্টটিকে ‘ ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ এর তালিকাভুক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েনন্সেস (AIIMS) এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে , এই নতুন ভ্যারিয়েন্টটির উপর বর্তমানে উপলব্ধ কোভিডের টিকাগুলি কাজ নাও করতে পারে।
এই ভ্যারিয়েন্টে প্রথম নমুনা মেলে দক্ষিণ আফ্রিকায়। প্রথমবার ২৪ নভেম্বর এই ভ্যারিয়েন্টটি চিহ্নিত করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার খবর অনুযায়ী, ৯ নভেম্বর সংগৃহীত একটি নমুনা থেকে বি.১.১.৫২৯ এর প্রথম হদিশ মিলেছিল। ওমিক্রন দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও ইতিমধ্যে বেলজিয়াম, হংকং এবং ইজরায়েলেও ছড়িয়ে পড়েছে।
ওমিক্রন কতটা বিপজ্জনক ?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মত অনুসারে, প্রাথমিক তথ্য খতিয়ে দেখা গিয়েছে, অন্যান্য সংক্রামক ভ্যারিয়েন্টগুলির তুলনায় ওমিক্রনের ‘রিইনফেকশনে’র ক্ষমতা অনেকগুণ বেশি। ফলত এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণে কারোর একবার সংক্রমণ হয়ে গেলে, এই ভ্যারিয়েন্টের তাঁর আবারও সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে কি কি জানা যাচ্ছে ?
গবেষকরা আফ্রিকার বতসোয়ানা থেকে নেওয়া একটি নমুনা বিশ্লেষণ করে বি.১.১.৫২৯ শনাক্ত করেন। পরীক্ষার দরুন যেই বিষয়টি নিয়ে গবেষকেরা সব চেয়ে বেশি অবাক হয়েছিলেন তা হল, সেই নমুনায় থাকা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে স্পাইক প্রোটিনের ৩০টিরও বেশি পরিবর্তন (মিউটেশন) হয়েছে। হু ও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মত অনুসারে, ভ্যারিয়েন্টটির সম্পর্কে আরও গভীর ভাবে জানা দরকার। সম্পূর্ণটা না বুঝে শঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। তবে তারই মধ্যে গত কয়েকদিনে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রায় সব প্রদেশেই এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে, জানা যাচ্ছে।
নয়া ভ্যারিয়েন্ট সামনে আসতেই টিকার কার্যকারিতা ও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আজ শীর্ষস্থানীয় বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকের মন্ত্রিপরিষদ সচিব রাজিব গৌবা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব পি.কে মিশ্র, স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ, এবং টাস্ক ফোর্সের প্রধান ডক্টর ভি.কে পাল উপস্থিত ছিলেন। বি.১.১.৫২৯ প্রজাতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা, বতসোয়ানা, হংকং থেকে আগত যাত্রীদের উপর নজরদারি চালাতে হবে। তাছাড়া যে সমস্ত দেশগুলি থেকে আগত যাত্রীদের ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রাখা হয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও একইরকমভাবে নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব।
ইতিমধ্যেই মুম্বাইয়ের মেয়র কিশোর পাদনেকর জানিয়ে দিয়েছেন – দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আগত যাত্রীদের বিমানবন্দর থেকেই সোজা কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে তাদের জিনোম সিকোয়েন্সিং-এর নমুনাও সংগ্রহ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।