আজ খবর ডেস্ক- দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সূত্রপাত করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের। এরপর তা প্রবেশ করে ব্রিটেনে। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা দুই ব্যক্তির মধ্যে তা পাওয়া গিয়েছে। সেইখান থেকেই ধীরে ধীরে ছড়াতে শুরু করেছে নতুন এই আতঙ্ক। ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সচিব বলেন, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, কন্টাক্ট ট্রেসিং-এর খোঁজ করার কাজ চলছে পাশাপাশি।
নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের আতঙ্ক ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে ভারতে। মুম্বাইয়ে আগত দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে যাবতীয় বিমান যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইন করা হবে বলে জানা গিয়েছে। তাদের মধ্যে নতুন এই ভেরিয়েন্ট পাওয়া গেলে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হবে বলেও জানান মুম্বাইয়ের মেয়র কিশোরী পেডনেকার।
ভারতে করোনা ছড়িয়ে পড়ার শুরুটা হয়েছিল কিছুটা এমনই। কেরালা থেকে সূত্রপাত হয়েছিল এই মহামারীর। এরপর দীর্ঘ লকডাউনের মধ্যে কাটিয়েছে গোটা দেশ। কেরালা এবং মহারাষ্ট্র ছিল সবচেয়ে উদ্বেগজনক রাজ্য। বর্তমানে ভারতে বেশ কিছু জায়গায় ফের বাড়তে আরম্ভ করেছে করোনা। করোনার দাপটে গোটা দেশ কাবু হয়ে পড়েছে ইতিমধ্যেই। তাই আর নতুন করে কোনও সম্ভাবনা রাখতে চাইছে না ভারত। কর্নাটকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বিদেশ থেকে ভারতে কেউ আসলেই বাধ্যতামূলকভাবে তাকে আরটিপিসিআর টেস্ট করাতে হবে। পাশাপাশি থাকতে হবে নিভৃতবাসে। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট যেসব দেশে ইতিমধ্যেই ঝড় তুলেছে সেই সব দেশ থেকে ভারতে কেউ এলে বিমানবন্দরেই তাদের টেস্ট করানো হবে। প্রয়োজন হলে রাজ্যের তরফে চিকিৎসা ব্যবস্থাও করা হবে।
কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে সুধাকর জানান, কর্নাটকে মোট ৬ জায়গায় জিনোমিক ল্যাবরেটরি রয়েছে। যার সাহায্যে নতুন ভেরিয়েন্ট কিভাবে তৈরি হচ্ছে সেই বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য পেয়ে যাবে রাজ্য সরকার।পাশাপাশি তিনি এও বলেন, বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের ক্ষেত্রে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা বাধ্যতামূলক। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বারবার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলিকে। কোনও মূল্যেই যেন করোনা পরিস্থিতিকে হালকাভাবে না নেওয়া হয়। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, যথেষ্ট কষ্ট করে করোনার ধাক্কা সামলিয়ে উঠেছে দেশ। ফের তা বাড়তে দেওয়া চলবে না কোনওমূল্যেই।
অন্যদিকে, আগামী সোমবার অসামরিক বিমান পরিষেবা মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকে বসবে দিল্লি বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর। আলোচনা হবে, নতুন ভ্যারিয়ান্টের সম্ভাব্য সংক্রমণ কী ভাবে ঠেকানো যায়। দক্ষিণ আফ্রিকা, বটসওয়ানা, জিম্বাবোয়ে এবং হংকং থেকে আসা বিমানযাত্রীদের বাধ্যতামূলক আরটিপিসিআর টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর। এর আগে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অনুরোধ করেন, যে দেশগুলিতে কোভিডের নতুন ভ্যারিয়ান্ট দেখা দিয়েছে, সেখানকার কোনও বিমান যেন ভারতে আসতে না দেওয়া হয়।
তবে নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে আলোচনার পাশাপাশি, দেশে যেন তা ছড়িয়ে পড়তে না পারে বা প্রবেশ করতে না পারে সেই বিষয়ে তৎপর হয়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় সরকার। লাগাতার দু’বছর যেভাবে করোনার ধাক্কা সামলাচ্ছে গোটা দেশ, এরপর নতুন এই আঘাত এলে কার্যত আর বাঁচানো যাবে না স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে, তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে।