আজ খবর ডেস্ক : চলতি বছরের অক্টোবর মাসের শেষের দিকে কেরালার ওয়েনাদ জেলার পুকোডে একটি ভেটেরিনারি কলেজের ১৩ জন ছাত্রের মধ্যে বিরল নোরোভাইরাসের মিলেছিল। তার পর থেকেই কর্ণাটকের কোডাগু এবং দক্ষিণ কন্নড় সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে এই নতুন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গত ২৩ শে নভেম্বর সেখানকার স্বাস্থ্য বিভাগের তরফ থেকে এই বিষয় একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেখানে পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য প্রতিটি জেলায় একজন করে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞকে নোডাল অফিসার হিসেবে নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া প্রতিটি জেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের আধিকারিকদেরও বিষয়টির উপর নজরদারি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে এটাই প্রথম নয়। এর আগেও ওই রাজ্যে চলতি বছরের জুন মাসে ওই রাজ্যের আলাপুঝায় নোরোভাইরাসের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল। আলাপুঝা পৌরসভা এবং তার সংলগ্ন পঞ্চায়েতগুলিতে তীব্র ডায়রিয়ার লক্ষণযুক্ত ৯৫০ টির ও বেশি নরোভাইরাস সংক্রমনের ঘটনা সামনে এসেছিল। ২৬ থেকে ৩০ শে জুনের মধ্যে, বমি , ডায়রিয়া সহ তীব্র গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসের লক্ষণযুক্ত ২৫৬ টি ঘটনা নতিভুক্ত করা হয়েছিল। তবে রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও স্ব-সীমাবদ্ধ ছিল। কারণ মোট আক্রান্ত রোগীদের ৯২% এরও বেশি রোগীদের শুধু বহির্বিভাগীয় চিকিৎসার মাধ্যমেই চিকিৎসা করা সম্ভব হয়েছিল।
পরবর্তী সময় রোগের উৎস অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, আলাপুঝা পৌর এলাকায় একটি জলের পাইপ ফেটে যাওয়ার সেখানকার জনসাধারণের জল সরবরাহ ব্যাহত হয়েছিল। তারই প্রায় ১০ দিন পরে এই প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। সেই সময় আর.ও প্ল্যান্টের মতো বাইরের উৎস থেকে মানুষকে জল সরবরাহ করতে হয়েছিল।একজন রোগীর বাড়ির পাবলিক সাপ্লাইয়ে সঞ্চিত পানীয় জলের নমুনা সংগ্রহ করে সেখানে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া (180/100 মিলি/এমপিএন) এর উপস্থিতি মেলে। যা এই রোগের অন্যতম প্রশমক। এরপর ১১ জন রোগীর মলের নমুনা আলাপুঝাতে NIV-এর ফিল্ড ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানে RT-q PCR টেস্টের মাধ্যমে নমুনাগুলিতে নোরোভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়।
ভাইরাসটি কি ভাবে সংক্রমিত হয়?
চিকিৎসকদের মতে দূষিত খাওয়ার , জল এবং সংক্রমিত ব্যাক্তির সরাসরি সংস্পর্শে এলে, তার থেকেই এই ভাইরাস একজনের দেহ থেকে অন্যদের দেহে ছড়ায়।
লক্ষণগুলি কি কি ?
এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ব্যক্তির বমি, ক্লান্তি , বমি ভাব, পেটে ব্যথা, মাথা ও গা -হাত -পা ব্যথা, এবং জ্বরের মত লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে চিকিৎসকদের তরফ থেকে সতর্ক করা হয়েছে, এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে রোগীদের দেরি না করে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। অবহেলা করলেই ফল মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
এই ভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষমতা অত্যন্ত বেশি। তাই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগে কেরালার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে সেখানকার রাজ্যবাসীকে কড়া সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।