আজ খবর ডেস্ক : আসন্ন কলকাতা পুরভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরই তৃণমূলের অন্দরে তৈরি হল চাপানউতোর। মূলত ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী দেওয়া নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কো-অর্ডিনেটর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়। সেই ওয়ার্ড থেকে তাঁরই পুরভোটে লড়ার কথা ছিল কিন্তু তাঁর বদলে ওই ওয়ার্ডে সদ্যপ্রয়াত রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ভগ্নি তনিমা চট্টোপাধ্যায়কে প্রার্থী করে সবুজ শিবির। রবিবার সকাল থেকে সেই মত প্রচারও শুরু করে দেন তনিমা। কিন্তু তার মধ্যেই ঘটনাপ্রবাহে রাজনৈতিক টানাপোড়ন তৈরি হয় তৃণমূলের অন্দরে। তাঁকে দলের প্রতীক প্রদান করার কিছুক্ষনের মধ্যেই সেই প্রতীক ফিরিয়ে নেয় তৃণমূল। যা থেকে তনিমা ওই ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হবেন কি না, সেই নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।

শনিবার সকাল থেকে দেওয়াল লিখে প্রচার শুরু করে করেন তনিমা। পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়েও প্রাথমিক প্রচার শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার মধ্যেই রবিবার রাতে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস কুমারকে নির্দেশ দেন তনিমার থেকে ফিরিয়ে নিতে হবে তৃণমূলের প্রতীক। সূত্রের খবর, কোনও রকম বিরোধে না গিয়ে দেবাশিসকে তৃণমূলের প্রতীক ফিরিয়ে দেন তনিমা। ফলত রবিবার রাতেও ৬৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে পারেননি তৃণমূল নেতৃত্ব।তারপর বিদায়ী ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর সুদর্শনা ওই ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হতে দিনভর দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল সভাপতির অফিসে ধরনা দেন বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, রবিবার রাতে সুদর্শনা জেলা সভাপতির কাছে দলের প্রতীকও দাবি করেন। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে ওই বিষয়ে কোনও সঠিক সিদ্ধান্ত জানান হয়নি।

অন্যদিকে, তৃণমূলের একাংশ জানায়, ওই ওয়ার্ডে সুদর্শনাকে প্রার্থী না করারই পক্ষপাতী দল। কারণ, প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা ‘আইপ্যাক’-এর তরফ থেকেও সুদর্শনাকে প্রার্থী না-করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। একসময় নিজেকে নিজেকে সুব্রতের ‘রাজনৈতিক ছাত্রী’ বলে পরিচয় দিতেন সুদর্শনা। তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক ভাবেও যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ ছিল সুদর্শনা। তার মধ্যেও দলের অন্দরে এবং এলাকায় বিদায়ী কো-অর্ডিনেটরকে নিয়ে একাধিক বিতর্কিত মত তৈরি হতে থাকে। যদিও সুদর্শনার ঘনিষ্ঠ মহল থেকে সমস্ত বিষয়টিকে ভিত্তিহীন ও অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়।

ফলত অনিমার থেকে আপাতত প্রতীক ফিরিয়ে নিলেও সুদর্শনাকে সেখানে থেকে প্রার্থী করা হবে কি না, সেই নিয়েও তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সুদর্শনার বদলে তনিমা বা নতুন কাউকে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে সমস্যার সমাধান করতে চাইছেন তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্ব।

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, গত ৪ নভেম্বর প্রয়াত হন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর ভগ্নিকে প্রার্থী করে ওই এলাকার মানুষদের কাছে বার্তা দিতে চেয়েছিলেন তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্ব। কিন্তু সূত্রের খবর, দলের অভ্যন্তরীণ মতবিরোধের কারণেই আপাতত তনিমার থেকে প্রতীক ফিরিয়ে নিল দল। তৃণমূলের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, আজ অর্থাৎ সোমবার রাতের মধ্যেই যাবতীয় সমস্যার সমাধান ঘটিয়ে ওই ওয়ার্ডের প্রার্থীর নাম নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *