আজ খবর ডেস্ক : রাজ্য প্রধান সচিবালয় নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্যালয়ও সেখানেই অবস্থিত। ফলত সবসময়ই কঠোর নিরাপত্তায় মুড়ে রাখা হয় এই এলাকাটিকে। সংলগ্ন এলাকাতেও জারি করা থাকে ১৪৪ ধারা। কিন্তু তারপরও হাওড়ার এই নীল-সাদা বিল্ডিংয়ের নিরাপত্তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। বহু সময় দেখা গিয়েছে বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন করতে করতে পৌঁছে গিয়েছে সরাসরি নবান্নের দুয়ারে। এত বড় প্রশাসনিক কার্যালয়ের নিরাপত্তা আরও জোরালো করতে নতুন উদ্যোগ নিল পুলিশ।
নবান্ন থেকে অনতিদূরেই বসানো হল নতুন লোহার গেট।নবান্নের মূল ফটক থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে এই লোহার গেটটি বসানো হয়েছে। নবান্নে হুটহাট মানুষের প্রবেশ রুখতেই এই পদক্ষেপ নিল প্রশাসন। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর টোল ট্যাক্স পেরিয়ে যেই ব্রিজ দিয়ে নবান্নের দিকে নামতে হয় সেই গেট বরাবরই বসানো হয়েছে এ লোহার গেট। তাতে বিনা অনুমতিতে নবান্নে যে কারোর অবাধ প্রবেশ রোখা সম্ভব হবে বলেই মনে করছে পুলিশ- প্রশাসন।সম্প্রতি শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের একটি প্রতিনিধিদল বিক্ষোভ দেখাতে সরাসরি পৌঁছে গিয়েছিলেন নবান্নের সভা ঘরের সামনে। সেই নিয়ে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বিবাদের জেরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় নবান্ন চত্বরে।
তাছাড়া এর আগেও নবান্নে হাজির হতে দেখা গিয়েছে বামফ্রন্টের প্রতিনিধি দলগুলিকেও । সেই নিয়েও যথেষ্ট শোরগোল তৈরি হয়েছিল। একবার সুজন চক্রবর্তী, তন্ময় ভট্টাচার্যের মত বাম নেতাদের বিনা অনুমতিতে নবান্নের ভিতরে প্রবেশ করাকে কেন্দ্র করে তাঁদের গ্রেপ্তারও করেছিল পুলিশ। নবান্নের আশেপাশে একাধিক জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা ইনস্টল করা রয়েছে। এছাড়া এলাকাজুড়ে দিনভর চলে পুলিশের টহলদারি। তার সত্ত্বেও কিভাবে সমস্ত নিরাপত্তা জাল ভেদ করে বারবার এই ধরনের অপ্রস্তুত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে নবান্নকে , সেই নিয়ে একাধিকবার প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে সরকারপক্ষের আধিকারিকদের।সেই সমস্ত অভিযোগ মাথায় রেখেই, ব্রিজে বসানো হচ্ছে নতুন লোহার গেট।
প্রশাসনের দাবি, শুধু পায়ে হেঁটে আসা আন্দোলনকারীরাই নয়, অনেক সময় বিক্ষোভকারীদের গাড়ি নিয়েই সরাসরি নবান্নে ঢুকে পড়তে দেখা গিয়েছে। তারা মনে করছেন এই নতুন গেট লাগানো তাই সেই সমস্যাও দূর হবে।জানা যাচ্ছে, নবান্নের নিরাপত্তা বাড়াতে ভিআইপি গেটের সামনে লোকসভার আদলে লাগানো হতে পারেন একটি অত্যাধুনিক সিস্টেম। যার নাম “হাইড্রোলিক রাইজিং বোল্ডার”।
কিভাবে কাজ করে এই “হাইড্রোলিক রাইজিং বোল্ডার” ?
ভিআইপি গেট থেকে কোন গাড়ি যখন ঢুকবে কেবল তখনই এই সিস্টেমের রাইজিং বোর্ডের নিচের দিকে নেমে যাবে, তাতে সহজেই ভিআইপি গেট থেকে সরাসরি নবান্নের ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে গাড়ি। এছাড়া অন্যান্য সময় প্রধান দ্বাররক্ষকের মত, নবান্নের ভিআইপি গেটের সামনে দন্ডায়মান থাকবে এই বোল্ডার। তাতে বিনা অনুমতিতে কোন গাড়ি সেখানে প্রবেশ করতে পারবে না।