আজ খবর ডেস্ক : ৯ বছর আগের ঘটনা। মায়ের হাতে মেয়ের খুন! বাবা দাপুটে মিডিয়া কর্তা। দেশ জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল এই ঘটনায়। অভিযোগ উঠেছিল, গাড়িতে তুলে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে নিজের মেয়েকে নৃশংস ভাবে খুন করেন ইন্দ্রানী মুখার্জি। সিবিআই তদন্ত চালু হয়। গ্রেপ্তার করা হয় পিটার ও ইন্দ্রানী মুখার্জিকে। ২০২০ সালে পিটার মুখার্জি জামিন পেলেও ইন্দ্রানী এখনও জেলে।এই অবস্থায় ইন্দ্রানীর সাম্প্রতিক দাবি ঘিরে ফের জোর চর্চা শুরু হল।কী বলছেন ইন্দ্রানী? সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ইন্দ্রানীর দাবি মেয়ে শীনা বরা বেঁচে আছে। সে কাশ্মীরে রয়েছে। এমনই অদ্ভুত দাবি করে সিবিআই অধিকর্তাকে চিঠি লিখেছেন শীনা বরা হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়।
চিঠিতে ইন্দ্রাণী নাকি দাবি করেছেন, সম্প্রতি জেলে এক মহিলার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তাঁর। সেই মহিলা ইন্দ্রাণীকে জানিয়েছেন কাশ্মীরে শীনার সঙ্গে দেখা হয়েছে তাঁর। ওই মহিলার দাবিকে চিঠিতে উল্লেখ করে শীনার খোঁজে কাশ্মীরে অনুসন্ধান চালানোর জন্য সিবিআইয়ের কাছে আর্জি জানিয়েছেন ইন্দ্রাণী। এ প্রসঙ্গে সিবিআই আদালতে একটি আবেদনও করেছেন তিনি।মেয়ে শীনাকে হত্যার অভিযোগে ২০১৫থেকে মুম্বইয়ের বাইকুল্লা জেলে রয়েছেন ইন্দ্রাণী। গত মাসেই বম্বে হাই কোর্ট তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করেছে।
জানা গেছে, সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন ইন্দ্রাণী। মেয়েকে খুন করার অভিযোগে ৬ বছর ধরে জেল খাটা ইন্দ্রাণীর এমন দাবি ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।শীনা বোরা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সামনে আসে ইন্দ্রাণীর গাড়িচালক শ্যামবর রাই গ্রেফতার হওয়ার পর। পুলিশের কাছে তিনি জানিয়েছিলেন, শীনাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন ইন্দ্রাণী। ২০১২-তে নিখোঁজ হয়ে যান শীনা। গুয়াহাটিতে দাদু-দিদার কাছে থাকতেন শীনা এবং তাঁর ভাই মিখাইল। ইন্দ্রাণী ছেলেমেয়েকে ছেড়ে মুম্বইয়ে চলে যান। সেখানে পিটার মুখার্জি কে বিয়ে করেন।শীনা সেটা জানতে পেরে মুম্বইয়ে ইন্দ্রাণীর কাছে হাজির হন। ইন্দ্রাণী তখন পিটার এবং তাঁর পরিচিতদের কাছে শীনাকে নিজের বোন বলে পরিচয় দেন। পরে তদন্তে জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ে থাকার জন্য একটি বাড়ি চেয়ে ইন্দ্রাণীকে লাগাতার হুমকি দিতেন শীনা। এর মধ্যেই শীনার সঙ্গে পিটারের আগের পক্ষের ছেলে রাহুলের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শীনা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর রাহুলকে ইন্দ্রানী জানান, পড়াশোনার জন্য বিদেশে গিয়েছেন শীনা।
প্রায় তিন বছর পর ২০১৫-তে শীনার হত্যার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এই ঘটনায় ইন্দ্রাণী, পিটার এবং ইন্দ্রাণীর প্রথম পক্ষের স্বামী সঞ্জীব খান্নাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দফায় দফায় পট পরিবর্তন হয়েছে। প্রেম-সম্পর্ক-পরকীয়া-অর্থ দিয়ে মোড়া এই ঘটনা নিয়ে “ডার্ক চকোলেট” নামে একটি ছবিও তৈরি হয় টলিউডে। পরিচালক ছিলেন অগ্নিদেব চ্যাটার্জি। অপরাধ বিজ্ঞান নিয়ে চর্চা করেন যাঁরা, তাঁদের মতে ইন্দ্রানী মুখার্জির এই দাবি ঘিরে সামনে আসতে চলেছে আরও নাটকীয়তা।