আজ খবর ডেস্ক- এ যেন সেই ছোট গল্পের সংজ্ঞা। “শেষ হয়ে হইল না শেষ..”। বস্তুত, রাজ্য বনাম রাজ্যপাল মেগা এপিসোডের ও যেন শেষ নেই। ২৪শে ডিসেম্বর হাওড়া পুরসভা সংক্রান্ত বিলে সই করলেন রাজ্যপাল। ভাবা হয়েছিল, এবার অন্তত সাময়িক বিরতি মিলবে। কিন্তু২৫ তারিখ টুইট করে রাজ্যপাল জানালেন, তিনি সই করেন নি। সূত্রের খবর, বর্ষশেষের আবহে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী এবং স্পিকারের বৈঠক হবে। মূল আলোচ্য বিষয়, রাজ্যপাল।
জানা গেছে, এই সোমবার বৈঠকে বসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৭ ডিসেম্বর স্পিকার বিমানের ঘরে মমতা বৈঠক করবেন। এই বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রে থাকবেন জগদীপ ধনখড় এবং তাঁর ভূমিকা।

সম্প্রতি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে দীর্ঘ চিঠি লিখেছেন বিধানসভার স্পিকার। রাজ্যের পরিষদীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন রাজ্যপাল, অভিযোগ এমনটাই।
এরপর স্পিকার-মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, হাওড়া ও বালি পুরসভায় ভোট করানো নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সঙ্ঘাত চরমে পৌঁছেছে।
শুক্রবার হাইকোর্টে অ্যাডভোকেট জেনারেল হাওড়ার বিলে রাজ্যপালের
সইয়ের কথা বললেও, সন্ধের পরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, হাওড়া বিলে সই করেননি রাজ্যপাল। শনিবার বিরোধী দলনেতার কথায় সায় দিয়ে টুইট করেন ধনখড়। ফলে চরমে পৌঁছেছে সঙ্ঘাত।

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্পিকারের 
বৈঠকের ফলাফল কী হয়, তার দিকে নজর রাখছে সব মহল। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে , মুখ্যমন্ত্রী এবং স্পিকার ছাড়াও ওই বৈঠকে থাকতে পারেন রাজ্যের বিশিষ্ট আইনজীবীরা। সূত্রের খবর, ওই দিনের বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বিধানসভার সচিবালয়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে। জানা গিয়েছে, বিধানসভার সচিবালয় তথা স্পিকারকে কোনও কাজ করতে গেলে তা পরিষদীয় দফতর মারফত করতে হয়। বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে গেলেও পরিষদীয় দলের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় বিধানসভাকে। বিধানসভার হাতে অধিবেশন ডাকা-সহ একাধিক অধিকার দেওয়ার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী স্পিকার-সহ আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে সূত্রের খবর। পরিষদীয় দফতরের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে কাজ করতে হচ্ছে। ফলে দেরি হচ্ছে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে। তাই বিধানসভার সচিবালয়ের ক্ষমতা বৃদ্ধির নিয়ে আলোচনা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে বিধানসভা সূত্রে খবর। প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় আসার পর থেকে পরিষদীয় দপ্তরের দায়িত্বে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

তবে বিশেষ সূত্র মারফত খবর, লাগাতার রাজ্যপালের ‘অসহযোগিতা’ও এই বৈঠকের মুখ্য বিষয় হতে পারে। গত বিধানসভায় পাশ হয়ে যাওয়া গণপিটুনি বিল এখনও আটকে রয়েছে রাজভবনে। আর হাওড়া সংশোধনী বিলটি রাজ্যপালের সই না হলে হাওড়া পুরসভায় ভোট করা তো যাবেই না, বালি পুরসভার নির্বাচন ও আটকে যেতে পারে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *