আজ খবর ডেস্ক : বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলার প্রচারে কার্যত তারকার হাট বসিয়েছিল বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যেন বাংলাকেই তার ঘর বানিয়ে ফেলেছিলেন। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা এত ঘনঘন রাজ্যে এসেছিলেন বিরোধীদের তরফ থেকে কটাক্ষ করে বলা হয়েছিল যে, তিনি রাজ্যের ‘ডেইলি প্যাসেঞ্জারি ‘ করছেন। একসময় জাতীয় রাজনীতিতেও নরেন্দ্র মোদিকে বাংলার প্রধানমন্ত্রী বলেও ব্যঙ্গ করা শুরু হয়েছিল। কিন্তু তারপরই রাজ্যে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হয়েছে তৃতীয় বারের মতো সরকার গঠন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনঘন আনাগোনাও যে কাজে দেয়নি, তার স্পষ্ট প্রতিফলন দেখা গিয়েছিল বিধানসভার ফলাফলে।
এরপর কিছুদিন আগেই রাজ্যে পুরভোট কর্মসূচি শুরু হয়। কিন্তু সেখানে প্রায় তারকাহীন প্রচার চলে বিজেপির। সম্প্রতি কলকাতায় রাজ্য বিজেপি-র নব গঠিত কমিটির সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষ। সেখানেই তিনি জানিয়েছিলেন, আগামী ৯ এবং ১০ ই জানুয়ারি কলকাতায় সফর করবেন নড্ডা এবং জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে উত্তরবঙ্গ সফরে আসবেন অমিত শাহ। কিন্তু তার কিছুদিন পরই তাঁর কর্মসূচি বাতিল করার কথা জানিয়ে দেন নাড্ডা। এরপর রাজ্য বিজেপি আশা করেছিল অন্তত শিলিগুড়ির পুরভোটের আগে উত্তরবঙ্গ সফরে দেখা যাবে শাহকে। কিন্তু সে গুড়ে বালি !
বিজেপি সূত্রে খবর, শেষবেলায় শাহও জানিয়ে দিয়েছেন যে, রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে বাংলা সফর আপাতত বাতিল করছেন তিনি। পরিস্থিতির বড় কোন বদল না ঘটলে, মনে করা হচ্ছে আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কথা জানিয়ে দেওয়া হবে।
জানিয়ে রাখি, রাজ্যের আগামী ২২ জানুয়ারির পুরভোট একমাস পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে সম্প্রতি কমিশনের কাছে চিঠি দিয়েছে গেরুয়া শিবির। তবে রাজ্য বিজেপির দাবি, অন্ততপক্ষে বিধাননগরের ভোট পিছিয়ে দিক কমিশন। তাদের মতে, শিলিগুড়ি, আসানসোল, চন্দননগরের তুলনায় বিধাননগরের করোনা সংক্রমণের হার অনেকটা বেশি। যদিও রাজনৈতিক মহলের মত, বিজেপি শিলিগুড়িতে তুলনামূলক ভাবে ‘শক্তিশালী’। তাই তারা চাইছে সেখানে আগে ভোট হয়ে যাক। সেখানে ফল ভাল হলে, বাকি জায়গায়তেও তার ‘ইতিবাচক প্রভাব’ পড়তে পারে বলে ভাবছে পদ্ম শিবির।
তবে ইতিমধ্যেই রাজ্যে গঙ্গাসাগর মেলার অনুমতির বিরোধিতা করেছে বিজেপি। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি যে সত্যিই উদ্বেগজনক তা বোঝাতেই শাহ ও নাড্ডা তাদের কর্মসূচি বাতিল করেছেন বলে মনে করছেন অনেকে।