আজ খবর ডেস্ক- জাপান অধিবাসীদের মতামত, ক্রমশই নাকি ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে জাপান। ধীরে ধীরে নাকি কমে আসছে জনসংখ্যা।

এরপরে যে তথ্য সামনে এসেছে তা শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে। ২০১৮ সালের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, জাপানের ১৩.৬ শতাংশ অঞ্চল পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছিল। পাশাপাশি আর একটি সমীক্ষা বলছে, ২০৪০ সাল নাগাদ পরিত্যক্ত সম্পত্তির পরিমাণ এতটাই বেড়ে যাবে, তার মিলিত হিসাব মধ্য ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়ার সমানে পৌঁছবে।

এই পরিত্যক্ত ও ফাঁকা সম্পত্তির বিষয়ে চিন্তা ভাবনা ইতিমধ্যেই শুরু করেছে জাপান সরকার। একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সরকারের অন্দরে, কি করা যায় এই সম্পত্তির। তবে মূল দুটি কারণ সামনে উঠে এসেছে যে কারণে এভাবে মালিকানা বিহীন সম্পত্তির পরিমাণ বাড়ছে। প্রথম, জাপানের জনসংখ্যা কমছে হু হু করে এবং দ্বিতীয়ত তরুণ প্রজন্ম পড়াশুনো বা কর্মসূত্রে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছেন। ২০১৮ সাল নাগাদ চার লক্ষ ৪৯ হাজার জনসংখ্যা কমে যায় জাপানের। ১৯৬৮ সাল থেকে যদি এই জনসংখ্যার হ্রাসের হিসাব কষা হয় তা হলে ওইটিই ছিল সর্বাধিক হ্রাস।

ওই সমীক্ষার মাধ্যমে আরও একটি তথ্য সামনে উঠে এসেছে। ১৯৬৮ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত অন্তত ১০ লক্ষ জনসংখ্যা হারিয়ে ফেলেছে জাপান। এর সঙ্গে দোসর হযে দাঁড়িয়েছে জাপানের ক্রমাগত জন্মহারের হ্রাস পাওয়া। তার উপর কর্মসূত্রে তরুণ প্রজন্ম অন্য দেশে পা বাড়াতেই এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়।

এই সমস্যা বেড়ে দাঁড়াতে দাঁড়াতে এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যে এখন জাপানের বহু অংশের বিভিন্ন বাড়ি পরিত্যক্ত। বহু চেষ্টা চরিত্র করেও তাদের মালিকের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। জাপানের আইন অনুযায়ী, পরিত্যক্ত সম্পত্তি সহজে সরকার অধিগ্রহণ করতে পারে না। সেই সব সম্পত্তি চাইলেই যে কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। সে জন্যেই, ওই সমস্ত সম্পত্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন জাপান সরকার। সেগুলিকে কাজে লাগানোর পরিবর্তে ফেলে রাখতে হচ্ছে নষ্ট হওয়ার জন্যই।

বাড়ি বিক্রির জন্য আলাদা করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছে টোকিয়ো থেকে ঘণ্টা দুয়েক দূরত্বে থাকা ওকোসুকা-র প্রশাসন । পুরনো বাড়ি কিনতে ইচ্ছুকদের জন্য খুব সস্তায় বাড়ি বিক্রির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে সেখানে।

টোকিয়োর টোয়োশিমা-কু শহরের প্রশাসন এই সমস্যামুক্তির একটি উপায় বার করেছে। পরিত্যক্ত বাড়ি কিনে কেউ সংস্কার করতে চাইলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে ভর্তুকি দেওয়া হবে। টোয়োশিমার পাশাপাশি আরও বেশ কিছু অঞ্চলের প্রশাসনও ভর্তুকির নিয়ম চালু করেছে ইতিমধ্যেই। ভারতীয় মুদ্রায় মাত্র চার লাখ টাকাতেই জমি-সহ আস্ত বাড়ি কেনার সুযোগ পাচ্ছেন ইচ্ছুকরা। তবে পাশাপাশি রয়েছে একটি শর্ত। যিনি বা যাঁরা ওই বাড়ি কিনবেন তাঁদের ১৮ বছরের নীচে সন্তান থাকতে হবে। এলাকায় কম বয়সিদের কমতে থাকা সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার বলে মনে করছেন একাংশ।




Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *