আজ খবর ডেস্ক- অস্কারে ভারতীয় ছবির মনোনয়ন নিয়ে এর আগেও বহু বিতর্ক তৈরি হতে দেখা গিয়েছে। এবার “উধম সিং” ছবির অস্কারে মনোনয়ন প্রত্যাখ্যান করা হল। কারণ “সিনেমাটিতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে খুব বেশি ঘৃণার প্রদর্শন করা হয়।”
এই যদি একটি শিল্প কার্যকে মান্যতা না দেওয়ার কারণ হয় তবে, ওই নির্বাচক মন্ডলীর ‘দ্য ব্যাটল অফ আলজিয়ার্স’ (১৯৬৬) দেখা উচিত। সিনেমাটি ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গোল্ডেন লায়ন পুরষ্কার লাভ করেছিল। সেই সঙ্গে তিনটি একাডেমি পুরস্কারের জন্যও মনোনীত হয়েছিল।
সিনেমাটিকে ফ্রান্সে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল, কারণ এটি ফরাসি ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যের আসল চেহারা ফাঁস করে দিয়েছিল। সেখানে দেখানো হয়েছিল কিভাবে আলজেরিয়ানরা ফরাসিদের সমূলে উৎখাত করে দিয়েছিল।
‘উধম সিং’ এবং ‘ফ্রান্টজ ফ্যানন’ দুই জনই ঔপনিবেশিক পরাশক্তির সাথে লড়াই করেছিলেন। সেই যুগে, যখন ফরাসি এবং ব্রিটিশরা বিশ্ব শাসন করছে। এই কারণেই চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন, ১৯৩৭ সালের আন্দামানের অনশন, ১৯৪৬ সালের নৌ বিদ্রোহ এবং পুন্নাপরা বিদ্রোহকে ভারতীয় ইতিহাসের তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
তবে ‘তারা আমাদের স্বাধীনতা উপহার দিয়েছে এবং আমরা তা ছিনিয়ে নিইনি’-র মত আখ্যান গুলি এবার বন্ধ হওয়া দরকার। সেই উদ্দেশ্যেই তৈরি এই ধরনের সিনেমা।
১৯৪৬ সালে RIN বিদ্রোহের সময় ফিল্ড মার্শাল অচিনলেক বলেছিলেন – “আমরা (ব্রিটিশ) যদি তিন দিনের মধ্যে তাদের স্বাধীনতা না দিই, তাহলে তারা জোর করে তা কেড়ে নেবে।”
তাই যে সকল দর্শকেরা এখনও পর্যন্ত ‘উধম সিং’ দেখেছেন তারা যদি পর্দায় সিনেমাটি দেখে হতবাক হয়ে থাকেন, তাহলে ভবিষ্যতে ১৯৪৬ সালের রয়্যাল নেভাল বিদ্রোহের উপর আরেকটি সিনেমা আসা পর্যন্ত অবশ্যই অপেক্ষা করুন।
ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর থেকে জাতীয়তাবাদীরা এই সিনেমা নিয়ে নীরব কারণ সিনেমায় বহু কমিউনিজম সম্পর্কিত বিষয় রয়েছে। সিনেমাটি দেখলেই বোঝা যাবে উধম সিং একজন মার্কসবাদী ছিলেন।
এমনকি ভারতীয় সিনেমা সমালোচকরা , যারা সর্বদা হলিউড এবং কোরিয়ান সিনেমার প্রশংসা করে থাকেন, এই সিনেমা সম্পর্কে মুখ খোলেননি তারাও।
তবে পি.এস বিনোথরাজ পরিচালিত ‘কুজহাঙ্গাল’ (নুড়ি/ পেবেলস) হল একমাত্র ছবি, যা ভারতের এবছরের চলচ্চিত্র হিসেবে ৯৪ তম একাডেমি পুরস্কারে নির্বাচিত হয়েছে। ফিল্ম ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (এফএফআই) মহাসচিব সুপ্রান সেন নিশ্চিত করার পর, ১৫ জনের নির্বাচক কমিটির চেয়ারপার্সন শাজি .এন করুন , এই খবরটি ঘোষণা করেন।
২০২১ সালের একাডেমি পুরস্কার ২০২২ সালের ২৭ শে মার্চ লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই ছবির বাছাই ও কলকাতায় স্ক্রীনিং প্রসঙ্গে সাজি এন করুণ বলেন, “সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষে কলকাতায় আমাদের স্ক্রিনিং করাটা কাব্যের মতো। সত্যজিৎ বিশ্বের কাছে ভারতীয় ঐতিহ্যের মশালবাহক ছিলেন এবং আমরা এমন একটি চলচ্চিত্র নির্বাচন করার চেষ্টা করব, যা ভারতের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটাবে পর্দায়।”