আজ খবর ডেস্ক– কোভিডকালে বহু পরিবর্তন দেখতে পাওয়া গিয়েছে চারপাশে। তার মধ্যে একটি, সিনেমা হল বন্ধ। এক ধাক্কায় ভারতের বাজারে হলি-বলি-টলি জগতের আর্থিক অবস্থা তলানিতে ঠেকেছিল। কিন্তু কোনও কিছুই বন্ধ হয় না, বিকল্প পথ হিসেবে চলে এসেছিল ওটিটি বা অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ দেখার সুযোগ। বাজার কাঁপিয়েছিল বিভিন্ন ওটিটি প্লাটফর্ম। কিন্তু সেই বাজারে ঘাটতি দেখতে পাচ্ছেন সংস্থাগুলি। কারণ খুলে যাচ্ছে সিনেমা হল।

সিনেমা হল বন্ধ থাকাকালীন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ছবি মুক্তি পায় সেই সময়। তবে সেগুলিকে ক্যান বন্দি করে রাখলে লোকসান ছাড়া আর কিছুই হবে না প্রযোজকদের। তাই সেগুলিকে মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় ওই অনলাইন মাধ্যমে। অনলাইন মাধ্যমে ওই ছবিগুলি মুক্তি পাওয়ার পাশাপাশি মুক্তি পায় অসংখ্য ওয়েব সিরিজ। সেগুলি সবই অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে দর্শকদের কাছে।

এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ২০১৯-২০ সালে ২১ লাখ থেকে সাবস্ক্রাইবারদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৩ লাখ। ফলে যথেষ্ট পরিমাণ সাড়া ফেলেছিল এই ওটিটি প্ল্যাটফর্ম।

অরম্যাক্স মিডিয়ার সি ই ও শৈলেশ কুমার জানান, জি ফাইভ, ডিসনি হটস্টার বা আমাজন প্রাইম সংস্থাগুলি বেশ উন্নতি করে এই দু’বছরে। তবে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। খুশির খবর এই যে অনুমান করা হচ্ছে চলতি বছরে বিপুল সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬ লাখ। অন্যদিকে অসংখ্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলির কর্ণধারেরা মনে করছেন সিনেমা হল খোলার সঙ্গে এর ওপর কোনও প্রভাব পড়বে না।

বিশিষ্টজনেরা মনে করছেন প্রত্যেক উৎসবের মরসুমে সেই সংক্রান্ত ছোটখাটো সিনেমা বা অনুষ্ঠান যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সাধারণের মধ্যে। এবং ডিজিটাল প্লাটফর্মে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সেই পরিমাণ সিনেমা মুক্তি পায় না, তাই ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এর জনপ্রিয়তা থাকবেই।

সম্প্রতি কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নতুন ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতি। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে পাঁচ হাজার টাকার উপরে রিচার্জ করতে গেলে সাবসক্রাইবারকে পাসওয়ার্ড প্রদান করা হবে। পাশাপাশি, এ ধরনের ওটিটি প্লাটফর্মে আগে থেকেই একটি নির্দিষ্ট দিনে ব্যাংক থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকা কেটে নেওয়া হত। তবে নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, সাবস্ক্রাইবারের ফোন নম্বরে আসবে একটি মেসেজ। তাতে পরবর্তী রিনিউয়াল এর জন্য সম্মতি চাওয়া হবে। সেই মেসেজ মারফত সম্মতি দিলেই পরবর্তী মাসের জন্য গ্রাহকের ব্যাংক থেকে কেটে নেওয়া হবে টাকা। ২৪ ঘন্টা আগে মেসেজ পাঠিয়ে সম্মতি নেওয়া হবে সংস্থার তরফে।

আশঙ্কা এখানেই, শহরাঞ্চলে অল্প বয়সীদের মধ্যে এই প্রবণতা ভালো হলেও বয়স্কদের মধ্যে সব সময় এই ধরনের কাজকর্ম করায় পটু হয়ে ওঠা হয় না। একইভাবে মফস্বল, গ্রামাঞ্চলের দিকে পারদর্শিতার অভাব দেখা যায়। তাই চিন্তা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সিনেমা হল খুললে মানুষ অনলাইন মাধ্যমে নিজেদেরকে ব্যস্ত রাখবেন নাকি। যে বিপুলভাবে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল এবং সারা বিশ্বে করোনা প্রভাব কিছুটা কমতেই, সিনেমা হল খোলার পরে সেই দৃশ্য আর দেখা যাবে নাকি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *