আজ খবর ডেস্ক:
বোলপুরের শান্তিনিকেতনে ভারত সেবাশ্রম সংঘের আশ্রমে সিবিআই টিম। ভারত সেবাশ্রম সংঘের জমি হাতানোর অভিযোগ অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। সন্ন্যাসীদের জোর করে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে, জলের দরে জমির দখল নিয়েছেন অনুব্রত, অভিযোগ ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসীদের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর ভারত সেবাশ্রম সংঘকে ওই জমি দান করেছিলেন সরকারের তরফ থেকে। অন্যায় ভাবেই ঝোপ বুঝে কোপ মেরে সেই জমি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)।
সিবিআই (CBI) রাডারে এবার তাই বোলপুরের ভারত সেবাশ্রম সংঘ (Bharat Sevashram Sangha)।
অভিযোগ উঠেছে চাপ দিয়ে আশ্রমের জমি হাতিয়ে নেওয়ার। কীভাবে চাপ দেওয়া হত সেটাই জানার চেষ্টা করছেন সিবিআই আধিকারিকরা। ভারত সেবাশ্রম সংঘের মহারাজদের সঙ্গেও কথা বলছেন তাঁরা। যদিও এই অভিযোগ আগেই উঠেছিল। এবার সরজমিনের তদন্ত শুরু করল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
মঙ্গলবার বীরভূমের বোলপুরে ভারত সেবাশ্রম সংঘের আশ্রমে যান সিবিআই আধিকারিকরা। মূলত অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে জমি কেলেঙ্কারি ও অবৈধ সম্পত্তির সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তে নেমে বোলপুরের আশ্রমে যান তাঁরা।
জানা যাচ্ছে, গরু পাচারকাণ্ডের (Cattle Smuggling) তদন্ত করতে গিয়ে বোলপুরের (Bolpur) ভারত সেবাশ্রম সংঘে পৌঁছয় সিবিআই। কেন্দ্রীয় এজেন্সির তিন আধিকারিক ভারত সেবাশ্রম অফিসের ভেতরে মহারাজদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
সিবিআই সূত্রে খবর, বোলপুরে বেশ কয়েক বিঘা জমি ভারত সেবাশ্রমের নামে ছিল। সেগুলি দানের মাধ্যমে প্রাপ্ত বলে খবর। সেই জমি অনুব্রতর কন্যার কোম্পানির নামে হস্তান্তর হয়েছিল বলে দাবি করা হচ্ছে। চাপ তৈরি করে বাজারদর থেকে অনেক কম দামে এই জমি হস্তান্তর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু দান করা জমি কেন ভারত সেবাশ্রম সংঘ অনুব্রত মণ্ডলের কন্যার কোম্পানির হাতে তুলে দিতে বাধ্য হল? এসব নিয়ে মহারাজের সঙ্গে কথা বলতে আশ্রমে যান সিবিআই কর্তারা।
কীভাবে সেই চাপ দেওয়া হত সেটাই জানার চেষ্টা করছেন সিবিআই কর্তারা। ভারত সেবাশ্রম সংঘের মহারাজদের সঙ্গেও কথা বলেছেন তাঁরা। ল্যান্ড রেজিস্ট্রি দপ্তর থেকে ইতিমধ্যেই সিবিআই এই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে। তার ভিত্তিতেই তদন্ত এগোচ্ছে।
অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মন্ডলের নামে একাধিক সম্পত্তির খোঁজ আগেই মিলেছিল। সেই সম্পত্তি কোথা থেকে কীভাবে এসেছে, তদন্ত চালাতে গিয়েই আশ্রমের জমির সন্ধান মেলে।
সিবিআই সূত্রে এও জানানো হচ্ছে, মহারাজদের সঙ্গে কথা বলার সময় অনেকেই জানিয়েছেন, জমি হস্তান্তর না করলে প্রাণনাশের চেষ্টা হতে পারে এমন হুমকিও মিলেছিল তাঁদের।
এদিকে অনেকেই জানেন অনুব্রত মণ্ডল তারা মায়ের ভক্ত বলেই পরিচিত। জেলে বসেও তিনি নাকি মা তারার আরাধনা করছেন। জনসেবায় সংঘের নাম গোটা পৃথিবী জুড়ে। সেই সংঘের জমি হাতিয়ে নেওয়ার এহেন অভিযোগ বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ওঠায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব।
বস্তুত, সিবিআইয়ের নজরে রয়েছে ভারত সেবাশ্রমের দেড় একর জমি। ওই জমিটি অনুব্রত কন্যা সুকন্যার কোম্পানির অধীনে রয়েছে৷ সেই জমিজমা সংক্রান্ত খোঁজখবর নিতে দিন কয়েক আগেই অনুব্রত কন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। তারপরে ভারত সেবাশ্রমে যায় টিম। তবে জানা গিয়েছে এদিন মঠাধ্যক্ষ না থাকায় কয়েকজন মহারাজের সঙ্গে কথা বলেই ভারত সেবাশ্রম থেকে ফিরে যান আধিকারিকরা।