আজ খবর ডেস্ক- উত্তরাখণ্ডে প্রবল বৃষ্টির জেরে একাধিক এলাকায় নেমেছ ধ্বস। বিপর্যয়ের জেরে এখনো পর্যন্ত ৪৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে একাধিক পর্যটক আটকে পড়েছে সেখানে। এরমধ্যেই পাহাড়ি ধ্বসে আটকে পড়েছেন বাগনানের পাঁচ বাঙালি পর্যটক। গত পঞ্চমীর দিন বাগনানের এন ডি ব্লকের বাসিন্দা দুই পরিবারের ৫ জন সদস্য গাড়িতে করে নৈনিতাল এর উদ্দেশ্যে রওনা দেন । পাঁচ জনের মধ্যে ছিলেন সত্যব্রত রায়, জয়ন্তী রায় ও তাঁদের ২২ বছরের ছেলে সৌম্যব্রত রায়। সঙ্গে পারিবারিক বন্ধু পরিবার অসীম গুড়ে অসীমা গুড়ে। বেড়াতে যাওয়ার পর থেকে নিয়মিত আত্মীয় পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও গতকাল বেলা ১২ টা থেকে তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। যদিও সম্ভবত বিপর্যয়ের কারণে মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ না করায় হয়তো যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে না। তবে টিভির পর্দায় ওই এলাকার ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে পরিবারের লোকেরা। আগামী রবিবার বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাদের।

শুধু তাই নয় সেখানে ঘুরতে গিয়ে আটকে পড়েছেন চুঁচুড়ার শ্যামবাবুর ঘাট ও গোরস্থান এলাকার আরও সাতজন পর্যটক। ১৫ অক্টোবর ট্রেনে হাওড়া থেকে উত্তরাখণ্ড বেড়াতে যান ওই সাত বাঙালি পর্যটক। অক্টোবর, তাঁরা নৈনিতাল পৌঁছন। সেখানে দু’দিন কাটিয়ে, তাঁদের ১৮ অক্টোবর, সোমবার কৌশানী যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নৈনিতাল থেকে কৌশানী যাওয়ার পথে ভওয়ালি নামে একটি জায়গায় আটকে পড়েন তারা। আপাতত একটি গেস্ট হাউসে গৃহবন্দি রয়েছেন তারা। জানিয়েছেন – খাবারের অসুবিধে না হলেও বিদ্যুৎহীন অবস্থায় থাকতে হচ্ছে তাদের। ফলে মোবাইলে চার্জ না দিতে পেরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, নৈনিতাল থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে তাঁরা এমন জায়গায় আটকে রয়েছেন যেখান থেকে কোনওদিকে যাওয়ার উপায় নেই। ধ্বসে বন্ধ হয়ে গেছে রাস্তা। পাহাড়ি নালা উপচে হু-হু করে জল নামছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী থাকলেও পরিস্থিতি বেশি খারাপ হওয়ায় তাঁরাও কাজে নামতে পারছেন না। ভওয়ালির কাছে রাস্তায় আটকে আছে প্রায় ৫০০ গাড়ি। সেক্ষেত্রে খাবারের ট্রাক রাস্তায় আটকে পড়ায় এই পরিস্থিতি বেশি দিন চললে রসদের সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

পরিবার পক্ষ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তাদের পরিজনদের উদ্ধার করার জন্য আবেদন জানিয়েছে। ইতিমধ্যেই উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি অতিবৃষ্টিতে প্রভাবিত বিভিন্ন এলাকা আকাশপথে ঘুরে করে দেখেছেন। পরে তিনি জানান, ‘বিপর্যস্ত এলাকাগুলি থেকে পর্যটকদের সরিয়ে আনতে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে সেনা পাঠানো হচ্ছে।’ গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যেই টেলিফোনে কথা বলেছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার পর থেকেই উত্তরাখণ্ড সরকার সক্রিয়ভাবে উদ্ধারকার্যে নামলেও এই মুহূর্তে প্রকৃতির তাণ্ডবলীলায় বেশ বেগ কিছু জায়গায় উদ্ধারকার্যে বাধা পেতে হচ্ছে তাদের।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *