সৌজন্যে সমাজ মাধ্যম

আজ খবর ডেস্ক- সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে , দেশজুড়ে ১০০ কোটি মানুষের কাছে ভ্যাকসিন পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে সরকার। তারপর গতকাল এই সাফল্য উদযাপনে দেশজুড়ে ১০০ টি জায়গাকে কেন্দ্রের তরফ থেকে তেরঙ্গা আলোয় সাজানো হয়েছিল। গতকাল এবং আজও জাতির উদ্দেশ্যে ভ্যাকসিনেশন নিয়ে বক্তব্য রাখতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কেন্দ্রের এই ঘোষণার পর থেকেই কটাক্ষের বেকা হাসি হাসছে বিরোধী দলগুলি। এবার সেই নিয়েই মোদী সরকারকে তুলোধোনা করলো রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী।

সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ১০০ কোটি দেশবাসীর টিকাকরন নিয়ে কেন্দ্রের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে একটি ভিডিও পোস্ট করেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। যেখানে তাকে বলতে শোনা গেছে – “ভ্যাকসিনেশন নিয়ে মোদী ও দিদি মিলে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।”

ভিডিওতে তিনি দাবি করেন – ” ভারতের মোট জনসংখ্যা ১৩৯ কোটি। তার মধ্যে ১০৩ থেকে ১০৬ কোটি প্রাপ্ত বয়স্ক। তার মধ্যে মাত্র ২১ শতাংশ মানুষের টিকার দুটি ডোজ নেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। ৫০ শতাংশ মানুষ এখনও টিকা পাননি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এমন ভাবে ঢাক ঢোল পিটিয়ে ১০০ কোটি ভ্যাকসিনেশন সম্পন্ন হওয়া উদযাপন করছেন যেন তাদের প্রত্যেকেরই দুটো করে টিকা নেওয়া হয়ে গেছে ।”

অন্যান্য বাইরের দেশগুলোতে জনগণকে ইতিমধ্যেই কোভিডের তিনটি করে টিকার ডোজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্বের সর্বাধিক জনসংখ্যার সম্পন্ন দেশ চীনের ৯০ শতাংশ মানুষের টিকার দুটি করে ডোজ নেওয়া হয়ে গিয়েছে। সেই নিরিখে বিচার করে দেখলে এখনো অনেকটাই পিছিয়ে ভারত। চলতি বছরের শুরুর দিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দপ্তর এর তরফ থেকে বলা হয়েছিল এই বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই দেশের সমস্ত মানুষের টিকাকরণ সম্পন্ন করা হবে। কিন্তু ইতিমধ্যেই সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্র। সেই মতো প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দাবি – “প্রতিদিন ১৫১ লাখ কেন্দ্রের তরফ থেকে সরবরাহ করা হলে তাহলে ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সমস্ত মানুষের টিকাকরণ সম্ভব। কিন্তু সেই জায়গায় প্রতিদিন মাত্র ৪৯ লাখ ভ্যাকসিন পাচ্ছে মানুষ”

কোভিড প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রাজ্য তথা দেশজুড়ে রান্নার গ্যাস,পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যকে কটাক্ষ করেন তিনি। বলেন – রান্নার গ্যাস , পেট্রোল ও ডিজেলের উপর লাগাতার দাম বাড়িয়ে কেন্দ্র এই মুহূর্তে ২৩ লাখ কোটি টাকা লাভ করছে। এছাড়া রান্নার গ্যাস ও পেট্রোপণ্যের ওপর আরোপিত মোট কর থেকে কেন্দ্র ৬০ শতাংশ ও রাজ্য ৩৭ শতাংশ লাভ করে। কিন্তু টিকা করনের জন্য কেন্দ্রের তরফ থেকে খরচ করা হয়েছে মাত্র ৩৫ হাজার কোটি টাকা। তাই কেন্দ্র ও রাজ্যের তরফ থেকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন ও রেশন দেয়ার যে দাবী করা হচ্ছে, সেই দাবিকে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

দেশজুড়ে ১৬ ই জানুয়ারি থেকে টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু তার অনেক আগে থেকে অন্যান্য দেশে টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল। অন্যান্য দেশ যখন সংক্রমণ রুখতে টিকাকরণ বাড়ানোর দিকে মনোযোগী হচ্ছিল, তখন বিশ্বের দরবারে নিজের খ্যাতি বাড়াতে নিজের দেশবাসীর কথা না ভেবে ভ্যাকসিন বিলোতে ব্যস্ত ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী, বলে মনে করেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী।

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতবর্ষকে ‘ভ্যাক্সিনেশন হাব’ বলে অভিহিত করা হলেও, বিশ্বের প্রথম ২০ টি টিকাকরণ সম্পন্ন হওয়া দেশের মধ্যে এখনো অনেকটাই পিছনে নাম রয়েছে ভারতের। তাই বিরোধীরা এই মুহূর্তে মোদীর সরকারের সাফল্যকে কোন মতেই ভালো চোখে দেখতে নারাজ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *