ভারত-মায়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিপাক্ষিক মহাসড়ক নির্মাণকাজ শেষ হলে এই সড়ক পথকে কেন্দ্র করে ভারতীয় বাণিজ্যে আসতে পারে বিপুল লাভের জোয়ার। ভারত-মায়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিপাক্ষিক মহাসড়ক হল ভারতের “অ্যাক্ট ইস্ট” নীতির অধীনে থাকা একটি নির্মীয়মাণ মহাসড়ক, যা ভারতের মণিপুর রাজ্যের মোরে শহরকে মায়ানমার হয়ে থাইল্যান্ডের মায়ে সোত শহরের সঙ্গে যুক্ত করবে।
এই পথ ধরেই আসিয়ান-ভারত মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যে জোয়ার আসতে চলেছে বলে প্রত্যাশা। ভারতের তরফে মহাসড়কটিকে কম্বোডিয়া, লাওস এমনকি ভিয়েতনাম পর্যন্ত সম্প্রসারণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ভারত থেকে ভিয়েতনাম পর্যন্ত প্রসারিত সড়কটি প্রস্তাবিত আনুমানিক ৩,২০০ কিমি (২,০০০ মাইল) দীর্ঘ । এর নাম দেওয়া হয়েছে “পূর্ব-পশ্চিম অর্থনৈতিক করিডোর”। সড়কটির থাইল্যান্ড থেকে ক্যাম্বোডিয়া ও ভিয়েতনাম পর্যন্ত অংশটি ২০১৫ সালে প্রথম চালু হয়। মহাসড়কটি চিন্দউইন নদীর উপরে নির্মীয়মান , পরবর্তী দিনে মণিওয়া নদীবন্দরগুলির সাথেও সংযুক্ত হবে।
লাওস, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনাম পর্যন্ত প্রসারিত হলে এই সংযোগসড়কটি বাৎসরিক ৭০০০ কোটি মার্কিন ডলার অতিরিক্ত স্থূল অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) এবং ২০২৫ সাল নাগাদ প্রায় ২ কোটি লোকের কর্মসংস্থান জোগাতে সাহায্য করবে। ২০১৭ সালের তথ্য অনুযায়ী, ভারত-আসিয়ান সংযুক্তি প্রকল্পগুলির জন্য ভারত সরকার ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণের ব্যবস্থা করে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে আয়োজিত ‘Sawasdee মোদী’ অনুষ্ঠানে আগেই এই সড়কের গুরুত্ব নিয়ে জানিয়ে ছিলেন – থাইল্যান্ড ও ভারতের সম্পর্ক সরকার নয় বরং ইতিহাস দ্বারা তৈরি হচ্ছে। মোদী বলেন যে পৌরাণিক যুগে ভারতের নাম জাম্বুদ্বীপের সাথে যুক্ত ছিল, থাইল্যান্ড ছিল সুবর্ণভূমের অংশ। এই সড়ক তৈরি হলে উত্তর-পূর্ব ভারত এবং থাইল্যান্ডের মধ্যে একটি ভালো যোগাযোগের পথ তৈরি হবে। শুধু বাণিজ্যই নয় বাড়বে পর্যটন শক্তিও।
রামায়ণ কাল থেকে থাইল্যান্ডের সাথে ভারতের সম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং বাণিজ্যের পাশাপাশি এই সড়ক যোগাযোগ মাধ্যম উন্নত , বাণিজ্যিক ও সংস্কৃতিক মিলনের ক্ষেত্রকে সুপ্রসারিত করবে।