আজ খবর ডেস্ক:

বারাসতের একটি বাড়িতে দূর্গা পুজো চলাকালীন সেই পুজোর ফেসবুক লাইভ করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। জার্মানিতে থেকে সেই পুজোর লাইভ দেখেছিলেন প্রবাসী বাঙালিরা। তখনই লাইভে পুরোহিতের পুজোর ধরন মনে ধরে যায় তাদের । তারপর ওই লাইভের সুবাদেই এবার দুর্গাপুজোর জন্য সুদূর জার্মানির ফ্র্যাঙ্কফুট থেকে ডাক পেলেন বারাসতের শালবাগান সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়। ৯ অক্টোবর ফ্র্যাঙ্কফুটের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তিনি।

জানা গেছেন , নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই প্রথম দুর্গাপুজো শুরু করেন গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়। আর প্রায় দশ বছরের বেশি সময় ধরে বারাসত তরুছায়া ক্লাবের পুজো করছেন তিনি। বর্তমানে তিনি বারাসত কলোনি মোড় সংলগ্ন বজরংবলী মন্দিরেরও পুরোহিত। নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো করার জন্য ২০১৬ সালে সেরা পুরোহিত হিসাবে পুরস্কারও পান গোবিন্দবাবু। পুজো করা ছাড়াও জ্যোতিষবিদ্যা, বাস্তুশাস্ত্র এবং নিউমেরোলজির বিষয়েও প্রখর জ্ঞান রয়েছে গোবিন্দবাবুর। রাজ্যের ভিতর একাধিক জেলা থেকে পুজো নিয়ে যথেষ্ট খ্যাতি রয়েছে ওনার। যে কারণে রাজ্যের একাধিক প্রান্ত থেকে প্রায়শই পুজো করার জন্য ডাক পান।

বছর দুয়েক আগে একবার মালয়েশিয়া থেকেও দুর্গা পুজো করার ডাক পেয়েছিলেন। কিন্তু পারিবারিক কারণে সেবারে যাওয়া হয়ে ওঠেনি । তবে এবার তিনি পারি দেবেন সুদূর জার্মানিতে। সেখানে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই প্লেনের টিকিট এবং স্পেশ্যাল ভিসাও পেয়ে গিয়েছেন গোবিন্দবাবু। এবিষয়ে গোবিন্দ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বারাসতের একজনের বাড়িতে পুজো করার সময় পরিবারের লোকেরা ফেসবুক লাইভ করেছিলেন। জার্মানিতে বসে সেই লাইভ দেখেন তাঁদের আত্মীয়রা। এরপরই আমার সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে তাঁরা যোগাযোগ করেন এবং এবারের দুর্গাপুজো ফ্র্যাঙ্কফুটের যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। যেখানে পুজো করতে যাচ্ছি সেখানকার অধিকাংশ মানুষ বাঙালি হলেও এখন তাঁরা জার্মানিরই নাগরিক।”

জানা গিয়েছে, মোট দশ দিনের জন্য যাচ্ছেন তিনি। ইতিমধ্যেই কুমারটুলি থেকে মাতৃপ্রতিমা পৌঁছে গিয়েছে জার্মানিতে। আর বাকি দুর্গাপুজোর উপাচার হিসেবে বেশ কিছু সরঞ্জাম গোবিন্দবাবু নিজেই নিয়ে যাবেন কলকাতা থেকে। প্রথম বিদেশ যাত্রার আগে আগামী প্রজন্মের পুরোহিতদের উদ্যেশে গোবিন্দবাবুর বলেন, পুজোকে পেশা করতে হলে এই কাজে নিষ্ঠার সঙ্গে মনোনিবেশ করতে হবে। সাথেই তিনি জানান, যদি আরও পুরোহিত বাইরে গিয়ে পুজো করার সুযোগ পান , সেই চেষ্টাও তিনি করবেন।

আমরা নানান কাজে বিদেশ যাওয়ার কথা শুনেছি। তবে পুজোর জন্য বিদেশ যাওয়ার বিষয়টা সত্যিই আরো একবার মনে করিয়ে দেয়, যে কোনো কাজই মন দিয়ে করলে সাফল্য অনিবার্য ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *