আজ খবর ডেস্ক:
বি.এস.এফ এর তরফ থেকে বৃহস্পতিবার জানানো হল, পাঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম আন্তর্জাতিক সীমান্তে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর এক্তিয়ার বাড়ানো হবে। রাজ্য জুড়ে আইনি অভিন্নতা বজায় রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
একটি সরকারী বিবৃতিতে, বিএসএফ এর তরফ থেকে বলা হয়েছে, ‘ আইনি অভিন্নতা’ বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং এই সংশোধিত নিয়ম সীমান্ত-রক্ষা বাহিনীকে সীমান্তের অপরাধমূলক কার্যবিধিকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করবে।
কিছু প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে যে, কেন্দ্র বিএসএফকে আন্তর্জাতিক সীমানা থেকে ভারতীয় সীমানার ৫০ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত তল্লাশি চালানোর, সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার এবং শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা প্রদান। এর আগে, বিএসএফের পাঞ্জাবের অভ্যন্তরে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত নিজেদের শাসন জারির ক্ষমতা ছিল।
ইতিমধ্যেই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নী এবং রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী এস.সুখজিন্দর সিং রন্ধাওয়া সহ বেশ কয়েকটি অবিজেপি রাজনৈতিক দলের নেতারা এই পদক্ষেপের পিছনে কেন্দ্রের নিজস্ব উদ্দেশ্য রয়েছে বলে প্রশ্ন তুলেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে এই সিদ্ধান্ত জানানোর পরই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরনজিৎ সিং চন্নী সিদ্ধান্তের চরম নিন্দা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে দ্রুত সিদ্ধান্ত বদলের আর্জি জানায়।
এদিকে, পাঞ্জাবের উপ -মুখ্যমন্ত্রী এস সুখজিন্দর সিং রন্ধাওয়াও একটি বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্রের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন এবং অমিত শাহকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বলেছেন।
সুখজিন্দর সিং রন্ধাওয়া বলেছিলেন যে এই “অযৌক্তিক” সিদ্ধান্ত সীমান্ত রক্ষী বাহিনীডের উত্থাপনের চেতনা বিরুদ্ধে, তাছাড়া অন্তর্দেশীয় প্রশাসনিক কার্যক্রম সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কাজ নয়।
এর আগে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল: “১১ অক্টোবর যে সংশোধনীটি কার্যকর হয়েছে, তা সেই অঞ্চলকে সংজ্ঞায়িত করার ক্ষেত্রে অভিন্নতা প্রতিষ্ঠা করে , যেখানে বিএসএফ তার দায়িত্বের সনদ অনুযায়ী কাজ করতে পারে এবং তার ভূমিকা পালন করতে পারে এবং তার এলাকায় সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে পারে। এমনকি, ইতিমধ্যেই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ও।”
গুজরাটে বিএসএফের আওতাধীন ৮০ কিলোমিটার থেকে কমিয়ে ৫০ কিমি বেল্ট করা হয়েছে। এটি রাজস্থানে ৫০ কিলোমিটারে একই রয়ে গেছে। মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, ত্রিপুরা, মণিপুর, জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখের ক্ষেত্রে কোন সীমা নির্ধারণ করা হয়নি, যেমনটি আগে ছিল।
বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স অ্যাক্ট, ১৯৬৮ এর ১৪৯ নং ধারা, কেন্দ্রকে , বাহিনীর এক্তিয়ার সম্পর্কে অবহিত করানোর ক্ষমতা দেয়, এর জন্য প্রয়োজনীয় যে কোনো ধরনের আদেশ সংসদের উভয় কক্ষের সামনে রাখতে হয়। সেখানে আদেশগুলি সংশোধন বা বাতিল করা হতে পারে।
তবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বিবাদ বাঁধার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এক সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকার দেওয়ার দরুন পাঞ্জাব পুলিশের একজন শীর্ষ অধিকর্তা জানান, ‘ এই পদক্ষেপের ফলে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে পারে। কারণ কেন্দ্রের নির্দেশে কাকে গ্রেফতার করতে হবে , তার উপরও রাজ্যের প্রভাব থাকবে। তাছাড়া ৫০ কিমি মানে প্রায় অর্ধেক রাজ্য , যার মধ্যে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলি পড়ে। কিছুটা অংশ আবার হরিয়ানা লাগোয়াও হতে পারে, সেক্ষেত্রে কি নিয়ম হবে সেই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু উল্লেখ নেই। “
পাল্টা বিএসএফের এক কর্মকর্তা বলেন, “বিজ্ঞপ্তিটি এই সময়ে প্রয়োজন ছিল। কারণ পাঞ্জাবে যদি ১৫ কিলোমিটার এলাকা ছাড়িয়ে কোনো আততায়ী ড্রোন চলে যায়, তাহলে কি আমাদের তাড়া করা উচিত নয়? বাংলাদেশ সীমান্তে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়, তবে তারা ভালভাবে জেনে যাবে যে তাদের ১৫ কিলোমিটার অতিক্রম করার পর বাহিনী তাদের আর তাড়া করতে পারবেনা। “