লাখিমপুর কৃষক হত্যার অভিযোগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের পুত্র আশীষ মিশ্রের জামিন খারিজ করলো সেখানকার আদালত।
সিনিয়র প্রসেকিউশন অফিসার এস.পি যাদব জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতি চিন্তা রাম আশীষ মিশ্র সহ তার সহযোগী আরেক অভিযুক্ত আশীষ পাণ্ডের বেল নামঞ্জুর করেছেন।
১২ ঘণ্টার লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদের পর গত ৯ ই অক্টোবর বিশেষ তদন্ত দল কর্তৃক আশীষ মিশ্রকে তিন দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছিল।

এই মামলায় এখন পর্যন্ত পুলিশ যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে, তারা হল – আশীষ মিশ্র, লাভকুশ, আশীষ পান্ডে এবং ভারতী।

আশীষ মিশ্রের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত অঙ্কিত দাস নামের আরেক ব্যাক্তিও সেদিন সকালেই লখিমপুরের ক্রাইম ব্রাঞ্চ অফিসে বিশেষ তদন্তকারী দলের সামনে হাজির হয়েছিল। সেখানে তাকে কৃষক মৃত্যুর সহ ঘটনার দিনের সহিংসতা নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

জানা গিয়েছে অঙ্কিত দাস সম্পর্কে প্রাক্তন মন্ত্রী অখিলেশ দাসের শ্যালক। জানা গিয়েছে দুর্ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে থাকা এস.ইউ.ভি গাড়িটির আসল মালিক তিনি।
পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সকাল ১১ টার দিকে দাস তার আইনজীবীদের একটি দল নিয়ে সংরক্ষিত পুলিশ লাইন এলাকায় ক্রাইম ব্রাঞ্চ অফিসে আসেন। গত মঙ্গলবার, দাস এবং লতিফ নামে পরিচিত আরেকজন প্রধান বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আত্মসমর্পণের আবেদন করেছিলেন।

এর আগে বুধবার, কংগ্রেসের প্রাক্তন দলীয় সভাপতি রাহুল গান্ধী সহ একটি কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোভিন্দের সাথে লখিমপুর খেরি সহিংসতার ঘটনা নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানেও তাদের তরফ থেকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় ​​কুমার মিশ্রের অবিলম্বে মন্ত্রীত্ব ত্যাগের দাবি জানানো হয়। সুপ্রিমকোর্টের দুইজন বিচারপতির কাছে একটি নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য একটি পৃথক বিচারক মন্ডলী তৈরিরও দাবি জানান হয়।

ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে প্রতিনিধি দল লখিমপুর খেরির ঘটনা সম্পর্কে একটি স্মারকলিপি রাষ্ট্রপতির কাছে উপস্থাপন করেছে।

বৈঠকের পর গান্ধী সাংবাদিকদের বলেন যে, তিনি রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছিলেন যে লখিমপুর সহিংসতার নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের পদত্যাগ করা উচিত। কারণ তার ছেলে আশীষ এই মামলার আসামি।
তিনি আরও বলেন , ” অজয় মিশ্র পদত্যাগ না করা পর্যন্ত ঘটনার ন্যায়বিচার হবে না। এটি শুধু নিহতদের পরিবারের নয়, সব কৃষকের কণ্ঠস্বর এবং সেই আওয়াজকে দমন করা হচ্ছে।”

কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলে ছিলেন – এ কে অ্যান্টনি, গোলাম নবী আজাদ, মল্লিকার্জুন খড়গে এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদরা।

তাদের থেকে রাষ্ট্রপতির প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়ায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধী দাবি করেন, “তিনি (রাষ্ট্রপতি) আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে তিনি আজই এই বিষয়ে সেখানকার রাজ্য সরকারের সাথে কথা বলবেন”।

কংগ্রেসের স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে যে, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সহ বিজেপি নেতারা অজয় ​​মিশ্রের প্রতি সহযোগী আচরণ করায় রাস্ট্রপতির হস্তক্ষেপ ছাড়া পরিস্থিতি পরিবর্তন সম্ভাব নয়।
কংগ্রেস আশা করেছিল যে – রাষ্ট্রপতি এই বিষয়টিকে তার প্রয়োজনীয়তার সাথে বিবেচনা করবেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *