আজ খবর ডেস্ক- সাম্প্রতিক সময়ে দেশজুড়ে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। এই মূল্য বৃদ্ধি বিগত কিছু বছরের মধ্যে সর্বাধিক। এই হার এখন এমন পর্যায় পৌঁছেছে যে, বর্তমানে এভিয়েশন টারবাইন জ্বালানি বা ATF, যা বিমান এবং হেলিকপ্টার চালাতে ব্যবহার হয়, তা কিনতে যে খরচ, তার থেকে প্রায় ৩০ শতাংশেরও বেশি খরচ হয় পেট্রোল ডিজেল কিনতে। তাতে মনে হতেই পারে যে ভারতে গাড়ি চালানোর চেয়ে বিমান চালানো সস্তা।

গত সোমবার পেট্রোল ও ডিজেলের দাম স্থিতিশীল থাকলেও আজ আবারো দেশজুড়ে বেড়েছে পেট্রোল ডিজেলের দাম। আজ কলকাতায় পেট্রোলের দাম ৩৪ পয়সা বেড়ে হয়েছে ১০৭ টাকা ১২ পয়সা, আর ডিজেলের দাম ৩৫ পয়সা দাম বেড়ে হয়েছে ৯৮ টাকা ৩৮ পয়সা। দাম বেড়েছে রাজধানীতেও। তবে কলকাতায় পেট্রোলের সর্বাধিক দাম বেড়েছে, আর মুম্বাইয়ে ডিজেলের সর্বাধিক দাম বেড়ে হয়েছে ১০৩ টাকা ২৬ পয়সা।

এই মুহূর্তে রাজস্থানের গঙ্গানগরে সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে পেট্রোল ও ডিজেল। সেখানে পেট্রোলের দাম প্রতি লিটারে বেড়ে দাড়িয়েছে ১১৭.৮৬ টাকা ডিজেলের দাম ১০৫.৯৫ টাকা।

ATF এর দাম সম্প্রতি বাড়ানোর সত্ত্বেও, পেট্রোল এবং ডিজেলের দামের তুলনায় অনেকটাই কম রয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দিল্লিতে লিটার প্রতি ATF এ খরচ হয় ৭৯ টাকা। কিন্তু ওই একই পরিমাণ পেট্রোলের জন্য খরচ করতে হয় ১০৫ টাকা ৮৪ পয়সা ও ডিজেল জন্য ৯৪ টাকা ৫৭ পয়সা ।

পেট্রল এবং ডিজেলের তুলনায় ATF এর দাম কম হওয়ার পিছনে কারণ হল এই জ্বালানীর উপর ট্যাক্স গণনার হিসাব। প্রচলিত পেট্রোল, ডিজেলের – জ্বালানির মতই ATF এর উপরও কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য উভয় করই আরোপিত হয়। তবে ভ্যাটের হারের বিভিন্নতার কারণে এটি রাজ্য থেকে রাজ্যে পরিবর্তিত হয়।

ATF যখন কেন্দ্রীয় আবগারি 11 শতাংশ অধিকার করে, তখন ভ্যাটের হার এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে শূন্য থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে পরিবর্তিত হয়। ATF- এর উপর ভ্যাট সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ আরোপিত হয় গুজরাটে, তামিলনাড়ু ও বিহারে ২৯ শতাংশ, এবং কর্ণাটকে ২৮ শতাংশ। তবে কেন্দ্রের তরফ থেকে বিমান সংস্থাগুলির উপর চাপ কমাতে সমস্ত রাজ্যকে ATF- এর উপর ভ্যাট কমিয়ে ৪ শতাংশের মধ্যে আনার আহ্বান জানিয়েছে। তবুও এর সম্ভাব্য সর্বোচ্চ মূল্য, ATF এর উপর আরোপিত সামগ্রিক করের হারের অর্ধেকও নয়।

জেট জ্বালানির তুলনায়, পেট্রল এবং ডিজেলের দামের উপর সরকারের তরফ থেকে ভারী কর বসানো হয়। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কর পেট্রোল খুচরা মূল্যের প্রায় ৬০ শতাংশ এবং ডিজেলের খুচরা মূল্যের হারের প্রায় ৫৪%।

শুধু তাই নয়, পেট্রোল ডিজেলের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার আবগারি শুল্ক এবং মালবাহী শুল্ক আরোপ করার পাশাপাশি, মোটর জ্বালানি, বিভিন্ন রাজ্য সরকার এবং ডিলার কমিশনের কাছ থেকে পরিবর্তনশীল ভ্যাটের পরিমাণও নিয়ে থাকে। যে কারণে দিল্লিতে, রাজ্য সরকার আবগারি শুল্ক আকারে রাজধানীতে বিক্রি হওয়া প্রতি লিটার পেট্রোলের থেকে প্রায় ২৩ টাকা আয় করে। ডিজেলের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ অনেকটাই কম, প্রতি লিটারে প্রায় ১৩ টাকা।

তবে বর্তমানে ATF -এর পাশাপাশি পেট্রোল -ডিজেল উভয়কেই জিএসটি ব্যবস্থার আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।এই পদক্ষেপে আগামী দিনে জ্বালানির উপর কর ভার উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে পারে। তাতে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *