আজ খবর ডেস্ক- ‘উত্তরপ্রদেশে সন্ধ্যা হয়ে গেলে মেয়েরা থানায় যাবেন না’ – পরামর্শ বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি বেবি রানী মৌর্যের এই বক্তব্যকে ঘিরে আবার বিতর্ক তৈরি হলো উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রায়শই নিজের রাজ্যকে অপরাধমুক্ত বলে দাবি করে থাকেন। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা যে তা নয়, সেই বিষয়টি হয়তো কারোরই অজানা নয়। ওই রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা দিন দিন এতটাই খারাপ হয়ে যাচ্ছে যে সেখানকার শাসকদল অর্থাৎ বিজেপির নেতা-নেত্রীরাও আর বিষয়টি নিয়ে চুপ থাকতে পারছেন না।
এবার এই নিয়ে মুখ খুললেন বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি এবং উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন রাজ্যপাল বেবি রানী মৌর্য। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারের দিকে সরাসরি প্রশ্ন তোলেন। সেই সঙ্গেই, অন্ধকার নামার পর রাজ্যের মহিলাদের একা থানায় না যাওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন রাজ্যপাল এবং বিজেপি নেত্রী বেবী রানী মৌর্য ভাষণ দেওয়ার সময় বলেন, “প্রত্যেক থানাতেই একজন মহিলা অফিসার এবং একজন সাব-ইন্সপেক্টর অবশ্যই বসেন। তবে একটা কথা অবশ্যই বলব যে, সন্ধ্যে পাঁচটার পর অন্ধকার নেমে গেলে কখনোই মহিলারা একা থানায় যাবেন না। প্রয়োজনে পরের দিন সকালে যান বা আপনার ভাই, স্বামী বা বাবাকে সঙ্গে নিয়ে যান।”
যোগীর কট্টর সমালোচক প্রাক্তন আইএএস সূর্য প্রতাপ সিং বিজেপি নেত্রী বেবী রানী মৌর্যের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেন। সূর্য প্রতাপ সিং টুইট করে লিখেন যে, ‘ প্রাক্তন রাজ্যপাল বেবী রানী মৌর্য যোগী সরকারের শাসনে মেয়েদের বেদনা ও দুর্দশার কথা তুলে ধরেছেন। রাজ্যপাল(মেঘালয়) সত্যপাল মালিক ইতিমধ্যেই মোদি সরকারের কাছা খুলে দিয়েছেন।’ তিনি আরও লিখেন, ‘হে বেবি রানি জি! সত্য কথা বলার জন্য ধন্যবাদ। যোগী জিকে আনন্দদায়ক উপহার।’
সেই একই সময়ে, কংগ্রেস নেতা বিভি শ্রীনিবাসও তার টুইটার হ্যান্ডেলে সেই বিবৃতি শেয়ার করে, বেবি রানী মৌর্যকে নিশানা করে প্রশ্ন করেন যে, মহিলার সাথে যদি সন্ধ্যা ৫.৩০ টায় কোন ঘটনা ঘটে তবে আমাদের কি পরের দিন সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত? । পাশাপাশি আপ নেতা ও সাংসদ সঞ্জয় সিং প্রাক্তন রাজ্যপালের বক্তব্য শেয়ার করে টুইট করেন, মেয়েকে বাঁচান।
বারাণসীতে আয়োজিত অনুষ্ঠান চলাকালীন, প্রাক্তন রাজ্যপাল বেবী রানী মৌর্য উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের সার না পাওয়ার জন্য প্রশাসনকে দোষারোপ করেন। তিনি বলেন, “কর্মকর্তারা সবাইকে বিভ্রান্ত করছেন। আগ্রা থেকে একজন কৃষকের ফোন পেলাম। সে সার পাচ্ছিল না তাই আমি অফিসারকে ফোন করলাম। কর্মকর্তা সার দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরে কৃষককে তা দিতে অস্বীকার করেন। এই ধরনের বদমায়েশি নিম্ন স্তরে ঘটে।”
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে বিজেপির প্রচারের প্রধান মুখ হিসেবে ঘোষণা করা হয় বেবী রানী মৌর্যের নাম। তারপর রাজ্য সরকার ও প্রশাসন সম্পর্কে মৌর্যের এরূপ মন্তব্য এই মুহূর্তে যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলছে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারকে।