আজ খবর ডেস্ক- লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের দীর্ঘ হয়রানি চলল সারাদিন জুড়ে। কোথাও সিগনালিং ব্যবস্থা বিকল হয়ে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ ছাড়তে দেরি করল ট্রেন, কোথাও আবার এক ধাক্কায় না জানিয়ে দ্বিগুণ ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়ায় সমস্যার মুখে পড়তে হল যাত্রীদের। সবমিলিয়ে হাওড়া এবং শিয়ালদহ শাখায় যাত্রীদের ক্ষোভের মুখে পড়ল পূর্ব রেল।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হল ভাড়া বেড়ে যাওয়া নিয়ে। যাত্রীদের একাংশের প্রশ্ন, না জানিয়ে এক ধাক্কায় এভাবে ভাড়া বাড়িয়ে দিলে যাতায়াত করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পাশাপাশি তাঁদের অভিযোগ, একেই মূল্যবৃদ্ধির কারণে খরচ বেড়েছে যাতায়াত ব্যবস্থায়। তার উপর এভাবে না জানিয়ে লোকাল ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর কি মানে?

লালগোলা প্যাসেঞ্জারের যাত্রীদের অভিযোগ ব্যারাকপুর থেকে শিয়ালদহ আসতে গেলে আগে যে ভাড়া দিতে হত, সেই প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে গিয়ে এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া ধার্য হয়েছে। এই নিয়ে লালগোলা প্যাসেঞ্জারের যাত্রীরা ক্ষোভ উগরে দেন এদিন।

ভাড়া বাড়ানোর এই দৃশ্য শুধু শিয়ালদহ শাখাতেই নয় বরং একই অভিযোগ উঠল হাওড়া শাখার বর্ধমান স্টেশনেও। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, বর্ধমান-আসানসোল রুটে এবং বর্ধমান- বোলপুর রুটে না জানিয়ে ভাড়া দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়েছে। প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলিতে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে এক্সপ্রেসের সমান। সব মিলিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয় যাত্রীদের। জানা যায়, আগে কোনও যাত্রীকে বর্ধমান থেকে অন্ডাল যেতে গেলে ভাড়া দিতে হতো কুড়ি টাকা, কিন্তু এখন সেখানে দিতে হচ্ছে পয়তাল্লিস টাকা। একই ছবি বর্ধমান বোলপুর শাখাতেও। সেখানেও বোলপুর যেতে গুনতে হত কুড়ি টাকা, পরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পয়তাল্লিস টাকা।

বর্ধমান স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক স্বপন অধিকারী জানান, বর্ধমান-বোলপুর, বর্ধমান-কাটোয়া, বর্ধমান-আসানসোল এবং বর্ধমান-হাওড়া রুটে যে সকল মেমু ট্রেন চলে, তাতে ব্যবহৃত হয কনভেনশনাল রেক। সেসব গাড়িতেই ভাড়া নেওয়া হচ্ছে এক্সপ্রেসের। লোকাল বা ইএমইউ ট্রেনে ভাড়া বৃদ্ধি হয়নি। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি অতিমারি কালে যাত্রী সংখ্যা কমাতেই এই পদক্ষেপ?

তবে ভাড়া বৃদ্ধির পিছনে অন্য কারণ দেখিয়েছেন আধিকারিক, তিনি বলেন গত মার্চ মাস থেকেই এই নতুন ভাড়া ধার্য করা হয়েছিল। করোনা অতিমারির সময়ে সাধারণ ট্রেন বন্ধ রেখে, শুধুমাত্র ‘স্পেশাল’ ট্রেন চালানো হচ্ছিল। তাই এই নতুন ভাড়া কার্যকর করা যায়নি। রাজ্যের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে লোকাল ট্রেনে ছাড়পত্র দেওয়াতেই, ‘স্পেশাল’ শব্দ উঠিয়ে কিছু প্যাসেঞ্জার ট্রেনে নতুন ভাড়া লাগু করা হয়েছে।

এদিন ভাড়া বৃদ্ধির কারণে বেশ ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় যাত্রীদের। ভাড়া বৃদ্ধির কথা আগে থেকে না জানায় টিকিট না কেটেই কাউন্টার থেকে ফিরতে হয় বহু যাত্রীদের।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *