আজ খবর ডেস্ক- ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার দিন ভাইকে ফোঁটা দেওয়ার রীতি বহুকাল ধরেই চলে আসছে। এদিনও বাংলার ঘরে ঘরে চলছে এই উৎসব। কোথাও আবার ভাইকে কাছে না পেয়ে ভার্চুয়াল মাধ্যমেই হচ্ছে ভাইফোঁটা। তবে শহরে এদিন একেবারে উল্টো ছবি দেখা গেল ভাষা ও চেতনা সমিতির উদ্যোগে।

এদিন মানিকতলার খালপাড় এলাকায় আয়োজিত হল গণ বোনফোঁটা। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন আট থেকে আশি সকলেই। অভিনব এই উদ্যোগে কার্যত খুশি এলাকার মানুষ।

যদিও এই অনুষ্ঠানে কেউই ব্রাত্য নন। রীতির বিপরীত স্রোতে হেঁটে এই অনুষ্ঠানে আগে ভাইদের তরফ থেকে ফোঁটা পান বোনেরা। তারপর ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দেন বোনেরা। ২০১৬ সাল থেকে ভাষা ও চেতনা সমিতির উদ্যোগে শুরু হয় এই নতুন ধারার ফোঁটা পার্বণ।

আয়লা বিধ্বস্ত সুন্দরবনে এই অনুষ্ঠান শুরু করেন তাঁরা। আয়লা ঝড়ের কারণে নিজের ভিটেমাটি এবং সব কিছুই হারিয়ে ফেলেছিলেন সেখানকার মানুষ। তাই সামান্য অস্তিত্বটুকু বোঝাতে এক চিলতে হাসি ফোটানোর জন্য উদ্যোগী হয়ে উঠেছিলেন এই সমিতির কর্মকর্তারা। তখন থেকে চলে আসছে বোন ফোঁটার রীতি। সকাল থেকেই নতুন জামাকাপড় পড়ে আদরের ভাই বোনেদের জন্য সেজে ওঠে ওই এলাকা।

ওই সমিতির এক কর্মকর্তার কথায়, “সমাজ মূলত পুরুষতান্ত্রিক। সেখানে পুরুষদের অধিকার এবং আদেশ বেশি পরিমাণে পালিত হয় বহুকাল ধরেই।তাই সেই প্রথাগত নিয়মকে কিছুটা পরিবর্তন করতে বোনেদের কপালে ভাইদের হাত দিয়ে ফোঁটা দেওয়ার রীতি শুরু করেছি আমরা”।

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে যোগ দেন এই উৎসবে। সমাজে কোনও বিভেদ নেই, সেই ছবিটাও তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন সমিতির কর্মকর্তারা। প্রায় দুশোর কাছাকাছি মানুষ অংশগ্রহণ করেন এই অনুষ্ঠানে। অন্তত একদিন হলেও সমাজের সামনে ধর্মকে ভুলে গিয়ে মনুষ্যত্বের দিকটাকে তুলে আনার চেষ্টা করেন ভাষা ও চেতনা সমিতির কর্মকর্তারা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *