আজ খবর ডেস্ক- রাজনৈতিক দলগুলোর তরফ থেকে একাধিকবার বিদ্রূপ, কটাক্ষ এসেছে বামেদের সামনে। বরিষ্ঠ নেতারা দল চালাচ্ছেন। জায়গা নেই তরুণ প্রজন্মের। তাতেই দল ও সংগঠনের এই করুণ অবস্থা। কার্যত সেই তকমা গা থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছে আলিমুদ্দিন। দলের শাখা সংগঠনের সম্মেলনগুলোয় এটায় এখন অন্যতম ইস্যু।

অপেক্ষাকৃত তরুণদের জায়গা করে দিতে কি আভ্যন্তরীণভাবে খোলনলচে বদলাতে চলেছে সিপিএম? যুব শক্তিকে ঢেলে সাজাতে এবং প্রধানত সৃজন, মীনাক্ষী, কলতান, ঐশীদের হাতিয়ার করে এগিয়ে যেতে চায় দল। আঞ্চলিক সম্মেলন চালাতে গিয়ে বেশ কিছু সমস্যা এবং প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে সিপিআইএমের সিনিয়র নেতাদের। বাম সংগঠনকে আরও মজবুত করতে এবং সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে সমস্যা সমাধান করতে গত ৯ অক্টোবর একটি বৈঠক করা হয় দলের অন্দরে। তার মধ্যেই নেওয়া হয়েছে একাধিক সিদ্ধান্ত। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, হারান জায়গা ফিরে পাওয়ার জন্য মরিয়া আলিমুদ্দিন। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, আসন্ন পুর নির্বাচনে জোট করাকে কেন্দ্র করে বাম এবং কংগ্রেসের মধ্যে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। বামফ্রন্টের শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে নারাজ। অন্যদিকে সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেস অন্তত আসন সমঝোতায় থাক, চাইছে আলিমুদ্দিন।

দলের পরিকাঠামো পরিবর্তন করার জন্য একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দলের তরফে। মহিলা শক্তি কিছুতেই কমাতে রাজি নয় বাম। তাই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে কমিটি গঠন করার সময় মহিলাদের সংখ্যা কমান হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে দলের তরফে। অন্যদিকে এরিয়া সদস্য কমিটি যদি নিয়োগ করতে হয় এবং তার বয়স যদি হয়ে থাকে ৩১ বছরের মধ্যে তবে তাঁকে গ্রহণ করা যাবে। অন্যদিকে, তিন বছর হয়ে গিয়েছে সদস্য পদ পাওয়ার পর এমন বিষয়গুলিকে মাথায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এও জানানো হয়, যদি তেমন ভাবে উপযুক্ত কাউকে না পাওয়া যায় তবে সেই সদস্যপদ ফাঁকা রাখতে হবে। পরে সেই ভাবে উপযুক্ত কাউকে পেলে তবেই শূন্য পদ পূরণ করা যাবে।

জেলা কমিটির জন্যে ৫৫ বছর এবং এরিয়া কমিটির জন্য ৫০ বছর ন্যূনতম বয়স ধার্য করা হয়েছে কোনও সদস্যকে গ্রহণ করার জন্য। জেলা কমিটির জন্য অন্যদিকে সর্বোচ্চ ৭০ বছর ধার্য করা হয়েছে। তার অধিক যদি কারও বয়স হয়ে থাকে সেই ক্ষেত্রে তাকে সেই পদ থেকে অব্যাহতি নিতে হবে বলেও জানানো হয় দলের তরফে। এই ধরনের দলের পরিকাঠামোকে সম্পূর্ণভাবে খোলনলচে বদলাতে চলেছে বাম সংগঠন।

তবে এমন অবস্থায় বাম সংগঠনের কপালে চিন্তার ভাঁজ আদতে শেষ পর্যন্ত জোটের পথে হাঁটবে নাকি। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধলে বেশ কিছু জায়গায় কংগ্রেসকে প্রার্থী দিতে বলা হবে বামেদের তরফ থেকে। অন্যদিকে, কলকাতা পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের জেতা আসন দাবি করছে ফরওয়ার্ড ব্লক ইতিমধ্যেই। সেই আসনে জিতেছিলেন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা প্রকাশ উপাধ্যায়। আপাতত বামেদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে কংগ্রেসের জন্য তারা ২০ থেকে ২৫ টি আসন ছেড়ে রেখেই প্রার্থী দেবে। ফরওয়ার্ড ব্লক ছাড়া অন্যান্য শরিকগুলি জোট করার পথে সমর্থন জানিয়েছে প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে। সেই বিষয়ে অনেকটাই চিন্তা কমেছে বলে মনে করছে বাম নেতৃত্বদের একাংশ। নির্বাচনের ঠিক আগেই, এরিয়া কমিটি এবং জেলা কমিটির সদস্য নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক করতে চাইছে বাম, অন্তত এমনটাই স্পষ্ট দলের কর্মসূচি দেখে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *